যুক্তরাষ্ট্র সরকার আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চিপ রপ্তানির উপর নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করায় প্রযুক্তি বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এর ফলে, চিপ প্রস্তুতকারক কোম্পানি এনভিডিয়া (Nvidia)-কে প্রায় ৫.৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
মূলত, চীনের উদ্দেশ্যে এই উন্নত প্রযুক্তির চিপ রপ্তানির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এনভিডিয়ার এইচ-২০ ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (integrated circuit) এবং অন্যান্য অনুরূপ ব্যান্ডউইথের চিপের রপ্তানির ক্ষেত্রে লাইসেন্সিংয়ের নতুন নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে, যা অনির্দিষ্টকালের জন্য বহাল থাকবে। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, এই ধরনের চিপ চীনে সরবরাহ করা হলে তা সুপার কম্পিউটার তৈরিতে ব্যবহৃত হতে পারে।
এই খবরের পর, শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম ৫.৮ শতাংশ কমেছে। একইসাথে, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী এএমডি’র শেয়ারও ৬.৫ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়েছে।
শুধু তাই নয়, এশিয়ার অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও ক্ষতির শিকার হয়েছে, যার মধ্যে টোকিওর অ্যাডভানটেস্ট-এর শেয়ার ৬.৭ শতাংশ এবং তাইওয়ানের টিএসএমসি-র শেয়ার ২.৪ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বাণিজ্য সচিবকে চিঠি লিখে এনভিডিয়ার এইচ-২০ সহ অন্যান্য উন্নত এআই চিপ চীনের বাজারে রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপের জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। ওয়ারেন তার চিঠিতে উল্লেখ করেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উন্নত এআই চিপ রপ্তানির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করেছিল, তা স্থগিত করার খবর পাওয়া গেছে।
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ক্ষেত্রে চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ এবং তাদের নিজস্ব প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা এই নিয়ন্ত্রণের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জানুয়ারিতে চীনের তৈরি ‘ডিপসিক এআই’ (DeepSeek AI) চ্যাটবট উন্মোচন হওয়ার পর বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। বিশ্লেষকদের মতে, উন্নত এআই চিপের মাধ্যমে চীন দ্রুত তাদের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটাতে পারে, যা উদ্বেগের কারণ।
অন্যদিকে, এনভিডিয়া সম্প্রতি জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা এবং টেক্সাসে তাদের ব্ল্যাকওয়েল চিপ (Blackwell chips) এবং এআই সুপার কম্পিউটার তৈরি ও পরীক্ষা করার জন্য বিশাল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, আগামী চার বছরে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলারের এআই অবকাঠামো তৈরি করার পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিখাতে অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস