নিউ ইয়র্ক সিটির একটি বহুল সুরক্ষিত অফিসে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হয়েছেন চারজন। এদের মধ্যে ছিলেন নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগের (এনওয়াইপিডি) একজন সদস্য, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দিদারুল ইসলাম।
ম্যানহাটনের পার্ক অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত 345 নম্বর ভবনে গত সোমবার (তারিখ যাচাই করতে হবে) সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে। হামলাকারী নিজের বন্দুকের গুলিতে আত্মহত্যা করেন।
ভবনটিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল বেশ জোরদার। এখানে নিয়মিত নিরাপত্তা প্রহরী, প্রবেশমুখে চেকিং ব্যবস্থা, নিয়ন্ত্রিত প্রবেশপথ এবং জরুরি অবস্থার জন্য সুরক্ষিত কক্ষের ব্যবস্থা ছিল। এত নিরাপত্তার পরেও কীভাবে হামলাকারী ভেতরে প্রবেশ করে এই ঘটনা ঘটালো, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে।
হামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২৭ বছর বয়সী শেন তামুরা নামের এক ব্যক্তি একটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে ভবনে প্রবেশ করেন। তিনি প্রথমে অফিসের ভেতরে থাকা এনওয়াইপিডি’র একজন পুলিশ সদস্য দিদারুল ইসলামকে গুলি করেন।
এরপর তিনি অফিসের অন্যান্য কর্মীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালান, এতে আরও তিনজন নিহত হন। পরে হামলাকারী নিজেও আত্মহত্যা করেন।
ঘটনার পর নিউ ইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হুকুল শোক প্রকাশ করে বলেন, “আমি বুঝি না, এর চেয়ে বেশি নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব?” তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, সেখানে একজন ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা দরকার। তাদের মতে, প্রতিটি অফিসের নিজস্ব ঝুঁকি মূল্যায়ন করা উচিত। একইসাথে, কর্মীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে।
এই ঘটনার পর নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগ বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছে। নিহত পুলিশ সদস্য দিদারুল ইসলামের পরিবারে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটিতেও শোকের আবহ বিরাজ করছে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ‘ফোর ডি’ পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেছেন: প্রতিরোধ (Deter), শনাক্তকরণ (Detect), বিলম্ব (Delay) এবং প্রতিহত করা (Detain)। অর্থাৎ, নিরাপত্তা স্তর এমনভাবে সাজাতে হবে, যা আক্রমণকারীকে নিরুৎসাহিত করবে, আগত হুমকি শনাক্ত করবে, প্রবেশের ক্ষেত্রে বিলম্ব করবে এবং অবশেষে হামলাকারীকে প্রতিহত করতে পারবে।
এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও, মানুষ সব সময় ঝুঁকির মধ্যে থাকে। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শুধু প্রযুক্তি নির্ভর না হয়ে কর্মীদের সচেতনতা এবং দ্রুত পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন