ওসিস (Oasis) ব্যান্ড-এর পুনর্মিলন কনসার্টের টিকিট কেনাবেচার নামে প্রতারণার শিকার হয়ে এরই মধ্যে ২ কোটির বেশি পাউন্ড খুইয়েছেন ভক্তরা। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে টিকিটের জালিয়াত চক্রের মাধ্যমে।
যুক্তরাজ্যের একটি প্রধান ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, শুধু গত বছর টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পর থেকেই এই প্রতারণা চলছে। প্রতারণার শিকার হওয়াদের মধ্যে একটি বড় অংশ, প্রায় ৫৬ শতাংশই টিকিট সংক্রান্ত প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এদের মধ্যে প্রত্যেক ভুক্তভোগী গড়ে ৪৩৬ পাউন্ড করে হারিয়েছেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬২ হাজার টাকার সমান (১ পাউন্ড = ১৪২ টাকা ধরে)। সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার হওয়া একজন ১,৭০০ পাউন্ডেরও বেশি খুইয়েছেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লক্ষ ৪২ হাজার টাকার সমান।
ব্যাংকিং সূত্র জানাচ্ছে, টিকিট জালিয়াত চক্র সাধারণত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া বিজ্ঞাপন দেয়। তারা আকর্ষণীয় দামে টিকিট বিক্রির প্রস্তাব দেয়, অথবা যে কনসার্টগুলির টিকিট ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে, সেগুলোর টিকিট বেশি দামে বিক্রির প্রস্তাব দেয়।
অনেক সময় তারা টিকিট নেই এমন ঘটনারও মিথ্যা আশ্বাস দেয়। ভুক্তভোগীরা অগ্রিম টাকা পরিশোধ করার পরে, প্রতারকরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এই ধরনের প্রতারণার শিকার হওয়াদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন ৩৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ব্যক্তিরা। এই বয়সীরা মোট ঘটনার প্রায় ৩০ শতাংশের শিকার।
স্কটল্যান্ডের এডিনবরা, ইংল্যান্ডের ওয়ারিংটন এবং ম্যানচেস্টারে এই ধরনের প্রতারণা বেশি দেখা যাচ্ছে। ব্যাংকটি জানিয়েছে, গত গ্রীষ্ম থেকে টিকিট বিক্রির শুরু হওয়ার পর থেকে ১,০০০-এর বেশি প্রতারণার ঘটনা তাদের নজরে এসেছে।
তাদের গ্রাহকদের হিসাব অনুযায়ী, ধারণা করা হচ্ছে, টিকিট জালিয়াত চক্রের খপ্পরে পড়ে এরই মধ্যে ৫,০০০ জনের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকিট কেনার সময় সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অচেনা বিক্রেতাদের থেকে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে।
পরিচিত এবং নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে টিকিট কেনা উচিত। যদি কেউ ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে বলে, তাহলে সে বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। কারণ, এক্ষেত্রে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টিকিট কিনলে কিছু ক্ষেত্রে সুরক্ষা পাওয়া যেতে পারে। টিকিট কেনার সময় কোনো সন্দেহজনক পোস্ট দেখলে, তা দ্রুত সামাজিক মাধ্যম এবং জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কেন্দ্রে জানাতে হবে।
টিকিট জালিয়াত চক্র সাধারণত দুটি সময়ে সক্রিয় হয়—টিকিট ছাড়ার শুরুতে এবং কনসার্টের তারিখ ঘনিয়ে আসার সময়। তাই, টিকিট কেনার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
অনলাইন প্রতারণা থেকে বাঁচতে সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান