নিউ ইয়র্ক শহরে একান্তে সময় কাটালেন বারাক ও মিশেল ওবামা। সম্প্রতি তাদের বিবাহিত জীবন নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো, সেই সমস্ত আলোচনার মাঝেই তাদের এই অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী হয়।
গত মঙ্গলবার, ২৭শে মে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং তার স্ত্রী মিশেল ওবামাকে নিউ ইয়র্কের ‘লোয়েল হোটেল’-এর একটি রেস্টুরেন্টে দেখা যায়। সেখানে তারা রাতের খাবার উপভোগ করেন।
মিশেল ওবামার পরনে ছিলো একটি লম্বা কালো পোশাক, যার হাতাতে ছিলো স্বচ্ছ ডিজাইন এবং কিছু ঢেউ খেলানো নকশা। পোশাকের সাথে তিনি পরেছিলেন কালো রঙের জুতা এবং হাতে ছিল একটি হ্যান্ডব্যাগ। কানে ও হাতে মানানসই গহনা, যা তার সাজসজ্জাকে পূর্ণতা দিয়েছিলো।
৬১ বছর বয়সী মিশেল ওবামাকে বেশ হাসিখুশি দেখাচ্ছিলো এবং ৬৩ বছর বয়সী বারাক ওবামার সাথে কাটানো সময় তিনি বেশ উপভোগ করেছেন।
তাদের এই একসঙ্গে ঘোরাঘুরির ঘটনাটি এমন সময়ে ঘটলো, যখন তাদের দাম্পত্য জীবন নিয়ে বিভিন্ন গুজব শোনা যাচ্ছিলো। বিশেষ করে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে মিশেল ওবামার অনুপস্থিতি এবং প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় তার যোগ না দেওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
তবে, সম্প্রতি ‘দ্য ডায়েরি অফ আ সিইও উইথ স্টিভেন বার্টলেট’ নামক একটি পডকাস্টে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মিশেল ওবামা স্পষ্টভাবে তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে ওঠা সমস্ত গুজবের অবসান ঘটান। তিনি বলেন, তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা হলে তা সবাই জানতে পারতো। তিনি আরও যোগ করেন, তিনি কোনো ‘শহীদ’ নন এবং তাদের সম্পর্কে কোনো সমস্যা হলে তিনি তা সবার সামনে অবশ্যই তুলে ধরতেন।
মিশেল ওবামা তার দাম্পত্য জীবন নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, তার স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের সৌন্দর্য হলো তারা কেউই সহজে হাল ছাড়ার মানুষ নন। তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, তিনি এবং বারাক দুজনেই একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ত।
নিজের কিছু অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মিশেল বলেন, ৬১ বছর বয়সে এসে তিনি নিজের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে শিখেছেন। আগে তিনি কোনো কিছুই এড়িয়ে যাওয়ার কথা ভাবতেন না, কিন্তু এখন তিনি নিজের অনুভূতির প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেন।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, তিনি এখন নিজেকে প্রশ্ন করেন – ‘আমি কি এই মুহূর্তে আমার জীবন পরিবর্তন করে, আমার শান্তি এবং সন্তানদের ছেড়ে এই ভ্রমণে যেতে চাই?’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমার যেতে না হলেও চলতো, তবে আমিই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এর আগে, ‘ইমো উইথ মিশেল ওবামা অ্যান্ড ক্রেইগ রবিনসন’ পডকাস্টে মিশেল বলেছিলেন, জনগন প্রায়ই ধরে নেয় যে, তিনি কোনো অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না মানেই তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা চলছে। তিনি বলেন, ‘মানুষ বিশ্বাস করতে পারছিল না যে, অন্য কোনো কারণেও আমি কোনো অনুষ্ঠানে যাইনি, তারা ধরেই নিয়েছিল যে, আমার বিবাহিত জীবন ভেঙে যাচ্ছে।’
অন্যদিকে, একই মাসে বারাক ওবামা রসিকতা করে বলেছিলেন, হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর মিশেলের কাছে তিনি ‘গভীর ঋণে’ ছিলেন। তিনি আরও জানান, মাঝে মাঝে মজাদার কিছু করে তিনি সেই ‘ঋণ’ শোধ করার চেষ্টা করছেন।
বারাক ও মিশেল ওবামা ১৯৯২ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তাদের মালিয়া ও সাশা নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
তথ্যসূত্র: পিপল