বারাক ওবামার সক্রিয়তা: ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন কৌশল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক তৎপরতা নিয়ে নতুন করে উদ্বিগ্ন। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্পের বিভিন্ন পদক্ষেপ আমেরিকার গণতন্ত্রের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে—এমনটা মনে করছেন তিনি।
এ কারণে ওবামা ধীরে ধীরে তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরে এসে ডেমোক্রেটিক পার্টির বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হচ্ছেন। খবরটি জানিয়েছে সিএনএন।
হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর ওবামা সাধারণত রাজনৈতিক আলোচনা থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন। তবে এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। দলের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ডেমোক্রেট নেতাদের পরামর্শ দেওয়া—সবকিছুতেই তাঁর মনোযোগ বাড়ছে।
এমনকি আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক প্রার্থীদের জেতাতে কৌশল নির্ধারণেও তিনি সাহায্য করছেন।
ওবামার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্পের ক্ষমতা ফিরে আসার পর তাঁর বিভিন্ন পদক্ষেপ ওবামাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। বিশেষ করে, ট্রাম্পের দল বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ডেমোক্রেটদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
এছাড়া, বিভিন্ন উদারপন্থী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও চেষ্টা চলছে। ওবামা মনে করেন, এমন পরিস্থিতিতে চুপ করে থাকলে আমেরিকার গণতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে।
এ বিষয়ে ওবামার দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার সিএনএনকে বলেন, “ক্ষতিটা এতটাই গভীর যে এর মোকাবিলায় ভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। ওবামার সক্রিয়তাও জরুরি।”
হোল্ডার আরও যোগ করেন, “আমরা যদি সতর্ক থাকি এবং চেষ্টা চালিয়ে যাই, তাহলে আমাদের গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে। হয়তো কিছু ক্ষতি হবে, তবে আমরা সব লড়াইয়ে জিতব না।”
ওবামার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি প্রায়ই ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বলেন, “যদি আপনার আদর্শ থাকে, আর সেগুলোর পরীক্ষা না হয়, তাহলে তা ফ্যাশনের মতো।”
আসন্ন নির্বাচনে বিভিন্ন রাজ্যে ডেমোক্রেটিক পার্টির গভর্নর প্রার্থীদের সমর্থন জানাতেও ওবামাকে দেখা যেতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দলের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ওবামার জনপ্রিয়তা এখনো অনেক বেশি।
তবে, ওবামার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ট্রাম্পের সম্ভাব্য আইনি পদক্ষেপগুলো কীভাবে মোকাবেলা করা যায়। কারণ, ট্রাম্প বিভিন্ন সময় তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিচার বিভাগকে উৎসাহিত করেছেন।
এছাড়াও, সুপ্রিম কোর্ট যদি ভোটাধিকার আইনকে দুর্বল করে দেয় বা বাতিল করে দেয়, তাহলে কী হবে—সে বিষয়টিও ওবামার উদ্বেগের কারণ। অভিবাসন ইস্যুতেও উত্তেজনা বাড়তে পারে, যা তাঁর ভাবনার বিষয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওবামার এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি সিএনএনকে বলেন, “তিনি দলের নেতা হতে চান না, তিনি ছিলেন বিশ্বের নেতা। তবে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, তাঁকে অনেক কথা বলতে হচ্ছে।”
ওবামা মনে করেন, তাঁর দল হয়তো তাঁকে এড়িয়ে চলছে, আবার কখনো মনে হয়, দলের সমস্যা এতটাই গভীর যে, এর সমাধানে তাঁর সাহায্য প্রয়োজন।
গণতন্ত্রের প্রতি ওবামার এই গভীর আগ্রহের কারণে অনেকেই মনে করেন, তিনি এখনো তাঁদের কাছে অনুপ্রেরণা।
ক্যালিফোর্নিয়ার একটি অনুষ্ঠানে ওবামা ডেমোক্রেটদের একজোট হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
ওবামার এই নতুন সক্রিয়তা রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করেন, তাঁর এই পদক্ষেপ আমেরিকার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে নতুন দিকে নিয়ে যাবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন
 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
				
			 
				
			 
				
			 
				
			