বিখ্যাত প্রকৃতিবিদ স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরোর নতুন তথ্যচিত্র ‘ওশান’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে।
সমুদ্র বিষয়ক এই ছবিতে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার নামে যে ধ্বংসলীলা চলছে, সেই বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
এই ছবিতে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে অত্যাধিক মাছ ধরার ফলে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের চরম ক্ষতির চিত্র।
অ্যাটেনবরো তাঁর ছবিতে, শিল্পায়িত পদ্ধতিতে মাছ ধরার ফলে সমুদ্রের তলদেশের জীবন কীভাবে ধ্বংস হচ্ছে, সেই বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
বিশাল আকারের ট্রলারগুলি সমুদ্রের নিচে বিচরণ করে এবং তাদের বিশাল জাল দিয়ে মাছ ধরে।
এর ফলে একদিকে যেমন মাছের প্রজাতি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, তেমনই অনেক ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ মাছ, যা ধরা হয়, তার বেশিরভাগই ফেলে দেওয়া হয়।
উন্নয়নশীল দেশগুলো এবং সেখানকার মৎস্যজীবীরা এই ধরণের কার্যক্রমের শিকার হচ্ছেন।
অ্যাটেনবরো এই বিষয়টিকে নতুন উপনিবেশবাদ হিসেবেও বর্ণনা করেছেন।
আসন্ন বিশ্ব মহাসাগর দিবস উপলক্ষে, এই ছবি মুক্তি পেতে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের এই দিবসের মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বের সমুদ্রের ৩০ শতাংশ এলাকাকে রক্ষা করা।
বর্তমানে, এই সুরক্ষার আওতায় আছে মাত্র ৩ শতাংশ এলাকা।
ডেভিড অ্যাটেনবরো তাঁর ৯৯ বছর বয়সে দাঁড়িয়ে, তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা এবং সমুদ্র নিয়ে দীর্ঘ গবেষণার আলোকে এই তথ্যচিত্রটি তৈরি করেছেন।
তাঁর মতে, সমুদ্র এখনো মানুষের কাছে সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায় নি এবং সম্ভবত এটিই শোষণের শেষ ক্ষেত্র হতে চলেছে।
অতীতে, সমুদ্রকে একটি বিশাল, রহস্যময় স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হতো, যেখানে খাদ্য সরবরাহ ছিলো অফুরন্ত।
কিন্তু এই ছবিতে তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত কার্যকলাপের কারণে সমুদ্রের এই অপরূপ সৌন্দর্য হুমকির মুখে পড়ছে।
অতিরিক্ত মাছ ধরা, সমুদ্রকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তবে, অ্যাটেনবরো আরও বলেছেন, ‘নো টেক জোন’ তৈরি করে, অর্থাৎ যেখানে মাছ ধরা নিষিদ্ধ, সেখানকার পরিবেশকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
তবে, অ্যাটেনবরো মনে করেন, এই বিষয়ে আত্মতুষ্টির কোনো অবকাশ নেই।
কারণ, অতিরিক্ত মাছ ধরার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পুনরুদ্ধারের সম্ভবনা থাকলেও, আমরা জানি না, ঠিক কতটা ধ্বংসের দিকে আমরা এগিয়ে গেছি।
সমুদ্র রক্ষার জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
ডেভিড অ্যাটেনবরোর এই তথ্যচিত্রটি একদিকে যেমন প্রকৃতির বিশালতা তুলে ধরে, তেমনই এর মাধ্যমে নৈতিক দায়বদ্ধতার বিষয়টিও স্পষ্ট হয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান