বিশ্বজুড়ে সমুদ্রের সৌন্দর্য আর তার প্রতি মানুষের ভালোবাসার চিত্র তুলে ধরে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় ‘ওশান ফটোগ্রাফার অফ দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতা। এবারের আসরে সেরার মুকুট জিতেছে ইন্দোনেশিয়ার আলোকচিত্রী ইউরি ইভানোভের তোলা একটি ছবি।
বালিতে নিজের ডাইভ সাইটে তোলা ছবিতে দেখা যায়, দুটি ক্ষুদ্রাকৃতির “সমুদ্রের লেডিবাগ” (amphipods) প্রবাল পাথরের উপর বিশ্রাম নিচ্ছে। ছবিটির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যে কারো দৃষ্টি কাড়ে।
প্রতিযোগিতার বিচারকরা জানিয়েছেন, ইভানোভের ছবিটি গভীর সমুদ্রের জীবনের এক দারুণ চিত্র তুলে ধরেছে, যা সাধারণত আমাদের চোখের আড়ালে থেকে যায়। মাত্র তিন মিলিমিটার আকারের এই “সমুদ্রের লেডিবাগ”-দের ছবি তুলতে অনেক ধৈর্য ও সূক্ষ্মতার প্রয়োজন হয়েছে বলে জানান ইভানোভ।
তাঁর মতে, এই পুরস্কার শুধু একটি ছবিকে সম্মানিত করা নয়, বরং সমুদ্রের গভীরতা, বৈচিত্র্য এবং আমাদের অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতাকে উদযাপন করা।
এবছরের প্রতিযোগিতায় ১৫ হাজারের বেশি ছবি জমা পড়েছিল, যার মধ্যে থেকে বিভিন্ন বিভাগে আরও কয়েকটি ছবিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। পর্তুগালের নাজার সমুদ্র সৈকতে বিশাল ঢেউয়ের মধ্যে একটি ব্যক্তিগত জলযানের ছবি, ফারো দ্বীপপুঞ্জে তিমি শিকারের মৌসুমে মৃত মায়ের পাশে একটি পাইলট তিমি বাচ্চার ছবি এবং হলুদ বামন গোবি মাছের মুখ থেকে সদ্যোজাত লার্ভা নির্গত হওয়ার ছবি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
প্রতিযোগিতার পরিচালক উইল হ্যারিসন বলেন, “এ বছরের বিজয়ীরা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফটোগ্রাফি নিছক শিল্প নয়, বরং এটি একটি সেতু। তাদের ছবিগুলো এমনভাবে মানুষের সঙ্গে সমুদ্রকে যুক্ত করে, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
যারা হয়তো সমুদ্রের গভীরে ডুব দিতে বা এর বুকে ভেসে বেড়াতে পারে না, তাদের জীবনও সমুদ্রের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
আগামী ৬ই নভেম্বর থেকে অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল মেরিটাইম মিউজিয়ামে এই ছবিগুলোর প্রদর্শনী শুরু হবে। এটি একটি দারুণ সুযোগ, যা সমুদ্রের প্রতি ভালোবাসা আরও বাড়িয়ে দেবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, সমুদ্র আমাদের জীবন ও প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশের জন্য বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই সমুদ্রকে রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
তথ্য সূত্র: সিএনএন