আর্ট উৎসবে পারমাণবিক খড়: আলোচনার শীর্ষে!

সোমারসেটের শান্ত গ্রামগুলোতে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘ওড আর্টস ফেস্টিভ্যাল’ শিল্পকলার এক ভিন্ন জগৎ উন্মোচন করেছে, যেখানে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক, ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার দ্বন্দ, পরিযান, এবং জীবনের চক্রের মতো বিষয়গুলো শিল্পকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। উৎসবটি যেন প্রকৃতির নীরবতার মাঝে শিল্পকলার এক নতুন দিগন্ত।

এবারের উৎসবের মূল ভাবনা ছিল ‘থিঙ্কিং ইন সার্কেলস’ বা ‘বৃত্তাকারে চিন্তা করা’। এই ধারণাকে কেন্দ্র করে শিল্পী-নির্মাতারা ঋতু, অভিবাসন এবং জীবনের নানা চক্রকে তাদের কাজে তুলে ধরেছেন।

উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল শিল্পী লিব্বি বোভের ‘মিউজিয়াম অফ রোডসাইড ম্যাজিক’। একটি বিশেষভাবে সজ্জিত ট্রাকে করে এই ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীটি দর্শকদের মাঝে দারুণ সাড়া ফেলেছে।

এখানে গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ক নানা কল্পিত গল্প ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। সেন্ট ডানলপের মতো কাল্পনিক চরিত্রের উপস্থাপনা, যারা টায়ারের মেরামত ও সংস্কারের সঙ্গে জড়িত, দর্শকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছে।

অন্যদিকে, সাইমন লি ডিকারের ‘রেড হট হেইস্ট্যাকস’ শিল্পকর্মটি দর্শকদের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি সৃষ্টি করেছে। ১৪ শতকের এক পুরনো হলঘরে ইউভি আলোয় আলোকিত খড়ের স্তূপগুলো যেন প্রকৃতি ও সামরিকীকরণের মধ্যেকার সম্পর্ককে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করে।

উৎসবের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো শ্রমিক শ্রেণির জীবন ও তাদের অভিজ্ঞতার চিত্রায়ণ। অ্যাডাম চডজকোর ‘দ্য পিকার্স’ শিল্পকর্মটিতে রোমানীয় অভিবাসী শ্রমিকদের কাজের দৃশ্য এবং তাদের চিন্তাভাবনার প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে।

শ্রমিকদের ক্যামেরাবন্দী করে তাদের বয়ানে পুরোনো দিনের শ্রমিকদের জীবন এবং বর্তমানের সঙ্গে তাদের তুলনা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

এছাড়াও, এমি আলরাইয়ের ‘ওয়ে পয়েন্টস’ দর্শকদের ঔপনিবেশিক বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান সম্পর্কিত এক ভিন্ন জগতে নিয়ে যায়। ওয়েস্ট কোকারের এক সময়ের খ্যাতিমান রজ্জু ও পাল তৈরির ইতিহাসকে কেন্দ্র করে তৈরি করা তার শিল্পকর্মগুলি দর্শকদের মধ্যে গভীর ভাবনার জন্ম দেয়।

চ্যাপেলের ভেতরে চানতাল পাওয়েলের সিরামিকের কাজ ‘এ সামনিং’ এবং এলা ইয়োলান্ডের কাপড় ও সুতোর বুননে তৈরি ‘ফাইন্ড আস ইন দ্য স্লিপ স্পেস’ জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণের প্রতীক হিসেবে দর্শকদের কাছে উপস্থাপিত হয়েছে।

এই আর্ট ফেস্টিভ্যালটি প্রকৃতির কাছাকাছি অবস্থিত গ্রামগুলোতে শিল্পকলার এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে, যা দর্শকদের চিরাচরিত ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন কিছু অনুভব করতে সহায়তা করে। এটি শুধু একটি শিল্প প্রদর্শনী নয়, বরং জীবন, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির এক গভীর অন্বেষণ।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *