সফোক্লিসের অমর সৃষ্টি: ইতালিতে ঈদিপাস ও ইলেক্ট্রার হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গল্প!

প্রাচীন গ্রিক নাটকের দুই উজ্জ্বল নক্ষত্র, ‘ইডিপাস এট কলোনাস’ এবং ‘ইলেক্ট্রা’ – এই দুইটি ট্র্যাজেডির মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা সম্প্রতি উপভোগ করলেন সিসিলির দর্শক।

ইতালির সুর্য্যস্নাত শহর সিরাকাসের প্রাচীন থিয়েটারে অনুষ্ঠিত এই নাট্য-উৎসব ছিলো যেন ক্লাসিকের এক দারুণ উদযাপন।

সফোক্লিসের ‘ইডিপাস এট কলোনাস’-এর গল্প, নির্বাসিত রাজা ইডিপাসের জীবনের শেষ দিনগুলির কথা বলে।

এই নাটকে, দর্শকের সামনে উন্মোচিত হয় এক গভীর উপলব্ধির জগৎ, যেখানে তিনি তার অতীতের সঙ্গে আপোষ করেন এবং মৃত্যুর মুখোমুখি হন।

ইডিপাসের চরিত্রে জুসেপ্পে সার্তোরি-র অভিনয় ছিলো অসাধারণ।

তার পদক্ষেপে দর্শকদের মধ্যে এক ভিন্ন অনুভূতি জাগে, যেন তিনি ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু একইসাথে ভেতরের শক্তি অনুভব করছেন।

নাটকের পরিচালক রবার্ট কার্সেন-এর মুন্সিয়ানায়, শোক এবং শুদ্ধতার এক অনন্য মিশ্রণ ফুটে উঠেছে।

অন্যদিকে, ‘ইলেক্ট্রা’ নাটকে, প্রতিশোধের আগুনে জ্বলতে থাকা এক নারীর গল্প তুলে ধরা হয়েছে।

পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ইলেক্ট্রা যেন এক জীবন্ত প্রতিমূর্তি।

সোনিয়া বের্গামাস্কো-র অনবদ্য অভিনয় দর্শকদের মন জয় করেছে।

তার অভিনয় বুঝিয়ে দেয়, কিভাবে শোক, ঘৃণা আর প্রতিশোধের আগুনে একজন মানুষ পুড়তে পারে।

রবার্তো আন্দোর পরিচালনায়, ইলেক্ট্রার মানসিক যন্ত্রণা এবং প্রতিশোধের তীব্র আকাঙ্ক্ষা দর্শকদের হৃদয়ে গভীরভাবে আলোড়ন তোলে।

নাটক দুটির সেট ডিজাইনও ছিলো দেখার মতো।

‘ইডিপাস এট কলোনাস’-এর মঞ্চে রাদু বোরুজেস্কু-র ডিজাইন করা বিশাল গাছগুলি যেন দর্শকদের সময়কে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।

অন্যদিকে, ‘ইলেক্ট্রা’-র মঞ্চে জিয়ান্নি কারলুচ্চিও-র ডিজাইন করা ভাঙা বাড়ির দৃশ্য, যেন অ্যাট্রিউস পরিবারের পতনের প্রতীক।

প্রাচীন গ্রিক থিয়েটারের এই গ্রীষ্মকালীন আয়োজন, ৬ই জুলাই পর্যন্ত, দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল।

নাটকগুলি শুধুমাত্র বিনোদনই যোগায়নি, বরং সফোক্লিসের ট্র্যাজেডির গভীরতা এবং তাৎপর্যকেও নতুন করে তুলে ধরেছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *