বেসবল তারকা শোওহেই ওহতনির মাঠে প্রত্যাবর্তনের দিনই তাঁর প্রাক্তন অনুবাদক ইপ্পেই মিজুহারার কারাবাস শুরু হয়েছে। প্রায় দুই বছর মাঠের বাইরে থাকার পর আবার খেলোয়াড় হিসেবে ফিরেছেন ওতানি, আর তাঁর প্রাক্তন সহকারীর এই ঘটনা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
মিজুহারা, যিনি ওহতনির খুব কাছের বন্ধু ছিলেন, খেলোয়াড়কে প্রায় ১৭ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ১৯০ কোটি টাকার বেশি) প্রতারণা করে আত্মসাৎ করেছেন। এই অপরাধের জন্য তিনি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মিজুহারার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে ব্যাংক ও ট্যাক্স ফাঁকির অভিযোগ। তিনি জুয়া খেলার দেনা পরিশোধ করার জন্য এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যবহার করেছিলেন। তদন্তে এটাও পরিষ্কার হয়েছে যে, ওহতনির এই বিষয়ে কোনো ধারণা ছিল না।
মিজুহারা নাকি খেলোয়াড়ের ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সময় বহুবার তাঁর পরিচয় দিতেন।
আদালতে দেওয়া এক চিঠিতে মিজুহারা তাঁর আর্থিক কষ্টের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি জুয়া খেলার প্রতি আসক্ত ছিলেন এবং এই কথা ওহতনির কাছে গোপন রেখেছিলেন।
জানা গেছে, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ওহতনির কাছ থেকে তিনি মাসে ২,৫০০ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা) বেতন পেতেন। আর ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, খেলার মৌসুম বন্ধ থাকার সময়, তিনি পেতেন মাত্র ১২৫ থেকে ১৩০ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা)।
চিঠিতে মিজুহারা আরও লেখেন, “আমি দিন এনে দিন খাইতাম। মাসের খরচ চালানোর জন্য বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের কাছ থেকে টাকা ধার করতে হতো।”
তিনি ওহতনির কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, “আমি তাঁকে একজন খেলোয়াড় এবং মানুষ হিসেবে সত্যিই শ্রদ্ধা করি। আমি চেয়েছিলাম, শোওহেই যেন মাঠে সেরাটা দিতে পারে। তাঁর বিশ্বাসভঙ্গ করার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”
মিজুহারার সঙ্গে ওহতনির সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ ছিল। খেলোয়াড় জীবনের প্রথম ছয় বছর মিজুহারা তাঁর সঙ্গে ছিলেন। খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলা থেকে শুরু করে মিডিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন—সবকিছুতেই তিনি ওহতনির পাশে ছিলেন।
এমনকি, ২০২১ সালের হোম রান ডার্বিতে ওহতনির ক্যাচার হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, আমেরিকান লিগ এমভিপি (মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার) পুরস্কার জেতার সময় এবং লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্সের সঙ্গে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৮০০ কোটি টাকা) চুক্তি স্বাক্ষরের সময়ও মিজুহারা তাঁর সঙ্গেই ছিলেন।
বর্তমান প্রজন্মের অন্যতম সেরা বেসবল খেলোয়াড় হিসেবে ওহতনির খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। জাপানে তিনি লোককথার নায়কের মতো জনপ্রিয়, আর আমেরিকাতেও তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী।
একই সঙ্গে ভালো খেলোয়াড় এবং পিচার (বোলার) হিসেবে খেলার কারণে তিনি বাবে রুথের পরেই বিশেষভাবে পরিচিত।
২০২৩ সালে একটি ইনজুরির কারণে ওহতনির অস্ত্রোপচার হয়। এরপর তিনি মাঠের বাইরে ছিলেন। গত বছর ওয়ার্ল্ড সিরিজে বাম কাঁধে পাওয়া আঘাতের কারণেও তাঁকে ভুগতে হয়েছে।
সম্প্রতি তিনি আবার মাঠে ফিরেছেন এবং প্রথম ইনিংসে একশো মাইলের বেশি গতিতে বল করেছেন। তাঁর সতীর্থ ম্যাক্স মানসি বলেছেন, “সে সবসময় আমাকে অবাক করে।”
তথ্য সূত্র: পিপলস