ইরানে বোমা: তেলের দামে আগুন, শেয়ার বাজার টালমাটাল!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানার প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে এবং একইসঙ্গে মার্কিন শেয়ার বাজারের সূচকও কিছুটা কমেছে। শনিবার (স্থানীয় সময়) যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরানের তিনটি সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়।

এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পায় এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ২.৬ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭৯ ডলারে পৌঁছেছে।

একইসঙ্গে, মার্কিন ক্রুড অয়েলের দামও ২.৬ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭৫.৭৬ ডলারে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছেন, যার কারণে শেয়ার বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে।

শেয়ার বাজারের চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এস অ্যান্ড পি ৫০০ এবং ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজের ফিউচার্স ০.৩ শতাংশ কমেছে।

অন্যদিকে, নাসডাকের ফিউচার্স ০.৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। তবে ট্রেজারি ইল্ডে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিনিয়োগকারীরা ধীরে ধীরে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরান এই ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে, যা বিশ্বব্যাপী তেলের সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

ইরান বিশ্বের অন্যতম তেল উৎপাদনকারী দেশ এবং হরমুজ প্রালীর কাছাকাছি অবস্থিত, যে পথ দিয়ে বিশ্বের অনেক দেশের অপরিশোধিত তেল পরিবহন করা হয়। যদি কোনো কারণে এই প্রণালী বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যেতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের এই জলপথ বন্ধ করা কঠিন হতে পারে, কারণ তারা নিজেরাই এই পথ ব্যবহার করে তাদের তেল রপ্তানি করে।

মূলত তারা তাদের তেল চীনে পাঠায়, যা তাদের রাজস্বের একটি প্রধান উৎস। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ইরান প্রতিশোধ নিতে পারে। তাদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১২০ থেকে ১৩০ ডলারে পৌঁছাতে পারে।

এর ফলে পরিবহন খরচ বাড়বে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বৃদ্ধি পেতে পারে।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। তেলের দাম বাড়লে দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে, যা পরিবহন খরচ বৃদ্ধি করবে।

এর সরাসরি প্রভাব পড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ওপর, ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে। তাই, আন্তর্জাতিক বাজারের এই অস্থিরতা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের কারণ।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *