ওকিনাওয়ায় অবস্থিত মার্কিন নৌসেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া। জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপে মোতায়েন করা মার্কিন নৌসেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং এর জেরে ওই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির বিতর্ক নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, অভিযুক্ত দুই মেরিন সেনা সদস্যের মধ্যে একজন গত মাসে ওকিনাওয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে এক জাপানি নারীকে ধর্ষণ করে এবং অন্যজন চলতি বছরের জানুয়ারিতে একই ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে।
দ্বিতীয় জন, যিনি ধর্ষণের সময় বাধা দিতে যাওয়া এক নারীকেও আহত করে। ঘটনার জেরে অভিযুক্তদের জাপানি কৌঁসুলিদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ওকিনাওয়ার গভর্নর ডেনি তামাকির মতে, এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং তিনি মার্কিন সামরিক কর্তৃপক্ষকে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, জাপানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জর্জ গ্লাসও এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি জানান, জাপান সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ও আস্থার সম্পর্ককে তিনি অত্যন্ত মূল্যবান মনে করেন এবং এই ধরনের ঘটনা সেই সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
উল্লেখ্য, ওকিনাওয়া দ্বীপটিতে জাপানে অবস্থানরত প্রায় ৪৭,০০০ মার্কিন সেনা সদস্যের অর্ধেকের বেশি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটির দুই-তৃতীয়াংশ অবস্থিত।
অতীতেও এই দ্বীপে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ উঠেছে, যার মধ্যে ধর্ষণের মতো গুরুতর ঘটনাও রয়েছে।
১৯৯৫ সালে তিনজন মার্কিন সেনা সদস্য কর্তৃক ১২ বছর বয়সী এক বালিকার অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, যা স্থানীয়দের মধ্যে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ তৈরি করে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, উভয় দেশ (জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র) ওকিনাওয়া থেকে প্রায় ৯,০০০ মেরিন সেনা সদস্যকে গুয়াম এবং অন্যান্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
কিন্তু আইনি ও রাজনৈতিক জটিলতার কারণে সেই প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।
বর্তমানে, চীন ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান মনে করে যে, ওকিনাওয়ায় মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে।
সাম্প্রতিক সময়ে, মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা এবং জাপানি পুলিশ যৌথভাবে ওকিনাওয়ার একটি নাইটক্লাবে টহল দিয়েছে।
১৯৭৪ সালের পর এই প্রথম দুই দেশ একসঙ্গে টহল দিল।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান