অচেনা শহরে লুকিয়ে আছে দারুণ আকর্ষণ! ঘুরে আসুন, ওকলাহোমা সিটি

ওকলাহোমা সিটি: আমেরিকার এক ভিন্ন স্বাদের গন্তব্য

ওকলাহোমা সিটি, যা সাধারণত ‘ওকেসি’ নামে পরিচিত, যুক্তরাষ্ট্রের একটি অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত শহর। তবে পর্যটকদের জন্য এর আকর্ষণ কিন্তু কম নয়। বিশাল আকাশ, বিস্তৃত ভূমি আর আধুনিকতার মিশ্রণে এই শহরটি যেন এক ভিন্ন স্বাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে। যারা আমেরিকার অন্য শহরগুলো ঘুরে দেখেছেন, তাদের জন্য ওকলাহোমা সিটি হতে পারে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন।

কেন ওকলাহোমা সিটি?

শহরটি ‘বিগ ফ্রেন্ডলি’ নামে পরিচিত, কারণ এখানকার মানুষের আন্তরিকতা ও আতিথেয়তা সহজেই চোখে পড়ে। এখানে পর্যটকদের জন্য সবসময় ভিড় লেগে থাকে না, তাই এখানকার আকর্ষণীয় স্থানগুলো উপভোগ করা অনেক সহজ। এখানকার খরচও অন্যান্য বড় শহরের তুলনায় বেশ সাশ্রয়ী।

ঐতিহাসিক পটভূমি

১৮৮৯ সালে ভূমি দখলের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মাধ্যমে ওকলাহোমা সিটির গোড়াপত্তন হয়, যা ‘ল্যান্ড রান’ নামে পরিচিত। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এখানে হাজার হাজার মানুষের বসবাস শুরু হয়। বর্তমানে, ওকলাহোমা সিটি রাজ্যের বৃহত্তম শহর এবং দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম।

দর্শনীয় স্থান

  • ওকলাহোমা সিটি ন্যাশনাল মেমোরিয়াল অ্যান্ড মিউজিয়াম: ১৯৯৫ সালের আলফ্রেড পি. মুরাহ ফেডারেল বিল্ডিং বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত এই স্মৃতিস্তম্ভটি শোক ও শ্রদ্ধার এক অনন্য উদাহরণ। এটি শহরের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রবেশমূল্য $18 (প্রায় ২,০০০ টাকা)।
  • ফার্স্ট আমেরিকানস মিউজিয়াম: এখানে ওকলাহোমার আদিবাসী সংস্কৃতি ও ইতিহাসের এক উজ্জ্বল চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
  • ন্যাশনাল কাউবয় অ্যান্ড ওয়েস্টার্ন হেরিটেজ মিউজিয়াম: যারা কাউবয় সংস্কৃতি ও পশ্চিমা জীবনধারা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।

আকর্ষণীয় হোটেল

  • ব্রাডফোর্ড হাউস: একটি ভিক্টোরিয়ান-শৈলীর বুটিক হোটেল, যা রুচিশীল সজ্জা ও আরামদায়ক পরিবেশের জন্য পরিচিত।
  • দ্য ন্যাশনাল: ঐতিহাসিক এই হোটেলটি একসময় ব্যাংকিং হল ছিল। এর স্থাপত্যশৈলী ও অভ্যন্তরীন সজ্জা এখনো পুরোনো দিনের স্মৃতি বহন করে।
  • ওকানা রিসোর্ট অ্যান্ড ইনডোর ওয়াটারপার্ক: বিশাল এই রিসোর্টটিতে ইনডোর ওয়াটারপার্ক, আউটডোর লেগুন এবং অন্যান্য বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।

স্বাদের ঠিকানা

ওকলাহোমা সিটির খাদ্য সংস্কৃতিও বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। এখানে বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ উপভোগ করা যেতে পারে:

  • পেঁয়াজ বার্গার: ওকলাহোমার একটি জনপ্রিয় খাবার, যা রাস্তার দোকান থেকে শুরু করে অভিজাত রেস্তোরাঁ পর্যন্ত সব জায়গায় পাওয়া যায়।
  • চিকেন-ফ্রাইড স্টেক: মাংসপ্রেমীদের জন্য একটি অসাধারণ পদ।
  • ফ্লোরেন্স’স রেস্টুরেন্ট: স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁ, যেখানে ঐতিহ্যবাহী আমেরিকান খাবার পাওয়া যায়।
  • ফ্রিদা সাউথওয়েস্ট: মেক্সিকান ও আমেরিকান খাবারের এক দারুণ মিশ্রণ এখানে পাওয়া যায়।

গমন ও আবহাওয়া

ওকলাহোমা সিটিতে ভ্রমণের উপযুক্ত সময় হলো অক্টোবর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। শহরটিতে উইল রজার্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (OKC) রয়েছে, যেখান থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে সরাসরি ফ্লাইট পাওয়া যায়।

আশা করা যায়, ওকলাহোমা সিটি ভ্রমণের এই ধারণা আপনাদের নতুন কিছু অভিজ্ঞতা দেবে। যারা আমেরিকায় ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন, তারা এই শহরটিকে তাদের ভ্রমণ তালিকায় যোগ করতে পারেন।

তথ্য সূত্র: Travel and Leisure

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *