স্কুলে মিথ্যা তথ্য! ওকলাহোমার পাঠ্যক্রমে 2020 নির্বাচন নিয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত!

ওকলাহোমা রাজ্যে, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে হাই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নতুন পাঠ্যক্রম তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংক্রান্ত বিতর্কিত কিছু বিষয়।

খবর অনুযায়ী, রাজ্যের শিক্ষা বিষয়ক তত্ত্বাবধায়ক (Superintendent of Public Instruction), রিপাবলিকান নেতা রায়ান ওয়াল্টার্স-এর নির্দেশে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নতুন পাঠ্যক্রমে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালের নির্বাচনে ‘অসামঞ্জস্যতা’ ছিল। এর মধ্যে ব্যালট গণনা হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়া, ডাকযোগে পাঠানো ভোটের নিরাপত্তা ঝুঁকি, অপ্রত্যাশিতভাবে বেশি সংখ্যক ভোটারের আগমন, এবং ‘বেলওয়েদার কাউন্টি’র (bellwether county) প্রবণতার মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।

সমালোচকদের মতে, এই বিষয়গুলো আসলে ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্র তত্ত্বের (conspiracy theories) জন্ম দেয়, যা শিক্ষার্থীদের ভুল পথে চালিত করতে পারে।

এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের শিক্ষক এবং অভিভাবকরা। তাদের মতে, এই পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে ইতিহাসকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, এতে বাইবেলের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা শিক্ষার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের পরিচয় দেয়।

যদিও ওয়াল্টার্স-এর দল রিপাবলিকান পার্টির অনেক সদস্যও এই পরিবর্তনের বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওকলাহোমার এই নতুন পাঠ্যক্রম আদর্শ শিক্ষার ধারণা থেকে বিচ্যুত হয়েছে।

কারণ, এর আগে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা বেশ ভালো ছিল। তবে, এই নতুন সংস্করণে নির্বাচনের ভুল তথ্য পরিবেশন করার চেষ্টা করা হয়েছে।

এছাড়া, বাইবেলের বিষয়গুলোও ইতিহাসের সঠিক ব্যাখ্যা দেয় না।

এই বিতর্কের মাঝে, রিপাবলিকান দলের কট্টরপন্থী সংগঠন ‘মমস্ ফর লিবার্টি’ (Moms for Liberty) -এর মতো কিছু গোষ্ঠী নতুন পাঠ্যক্রমের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।

তারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হুমকি দিয়ে বলেছে, এই পরিবর্তনের বিরোধিতা করলে তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ক্ষতি হতে পারে।

অন্যদিকে, রায়ান ওয়াল্টার্স বলছেন, নতুন পাঠ্যক্রম শিক্ষার্থীদের সমালোচনামূলক চিন্তা করতে উৎসাহিত করবে।

তিনি দাবি করেন, এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘটনার বাস্তব চিত্র দেখতে এবং নিজস্ব সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবে।

তবে, ডেমোক্র্যাট দলের নেতারা বলছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এর ফলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে।

তাদের মতে, ওয়াল্টার্স সম্ভবত ২০২৬ সালের গভর্নর পদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাই এই ধরনের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

ওকলাহোমার এই ঘটনা শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের একটি উদাহরণ। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ একটি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানো এবং তাদের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটানো অপরিহার্য।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *