ফ্যাশন দুনিয়ায় পুরনো ব্যাগের কদর বাড়ছে, বাড়ছে রুচিও। এক সময় বাজারে নতুন ব্যাগ আসার সঙ্গে সঙ্গেই পুরনো ব্যাগগুলো বাতিল হয়ে যেত। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। এখনকার ফ্যাশন সচেতন মানুষের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিচ্ছে পুরনো, ব্যবহার করা ব্যাগ।
এই পরিবর্তনের কারণ কী? আসলে, কয়েক বছর আগেও নামী ব্র্যান্ডের নতুন ব্যাগ-এর চাহিদা ছিল তুঙ্গে। ‘ইট ব্যাগ’ নামে পরিচিত এইসব ব্যাগের ডিজাইন এবং নির্মাণশৈলী সবসময় আকর্ষণীয় হত।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এইসব ব্যাগের আকার, ধরন এবং ডিজাইন-এ পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু নতুনত্বের মোহই ছিল প্রধান। কিন্তু এখন, পুরনো ব্যাগের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। এমন ব্যাগ, যা ব্যবহারের ফলে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেইগুলো এখন স্ট্যাটাস সিম্বল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিখ্যাত ফ্যাশন হাউসগুলোও এখন পুরনো, ব্যবহৃত লুকের ব্যাগ তৈরি করছে। উদাহরণস্বরূপ, বালেন্সিয়াগা-র (Balenciaga) ডিজাইন করা কিছু ব্যাগে দেখা যায় আঁচড়ের ছাপ, কোচ (Coach) -এর ব্যাগে থাকে গ্রাফিতি, বোটtega ভেনেটা-র (Bottega Veneta) ব্যাগে কাগজের টুকরো গোঁজা, এবং মিউ মিউ (Miu Miu) -এর ব্যাগে দেখা যায় অতিরিক্ত জুতা বা সোয়েটার।
পুরনো ব্যাগের এই নতুন চাহিদার কারণ হলো, মানুষ এখন এমন ব্যাগ চায় যা দেখতে সুন্দর হওয়ার পাশাপাশি টেকসই ও নির্ভরযোগ্য। একটি নতুন ব্যাগ কেনার পর, তার গুণাগুণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সময় লাগে। ব্যবহারের মাধ্যমেই বোঝা যায়, একটি ব্যাগের কতটুকু জায়গা, তার স্ট্র্যাপ কতটা আরামদায়ক, ইত্যাদি।
পুরনো ব্যাগ ব্যবহারের ফলে এইসব বিষয়গুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। পুরনো ব্যাগের এই ধারণা ফ্যাশন বিশ্বে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
এই পরিবর্তনের ফলে, ব্যাগ তৈরি এবং বিপণনের ধরনেও পরিবর্তন আসছে। উদাহরণস্বরূপ, লুই ভুইটন (Louis Vuitton) -এর একটি পুরনো, তাকাসা মুরকামির (Takasha Murakami) সঙ্গে করা কোলাবরেশন-এর ব্যাগ, যা প্রায় ২০ বছর আগের, ২০২৩ সালে আবার বাজারে আসে এবং সেটি বেশ জনপ্রিয় হয়।
ফ্যাশন এখন শুধু নতুনত্বের মোহে আবদ্ধ নয়, বরং পুরনো জিনিসের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। এটি একটি সুস্থ ও ইতিবাচক পরিবর্তন, যা আমাদের ফ্যাশন সম্পর্কে নতুন ধারণা দেয়। পুরনো, প্রিয় ব্যাগ-এর কদর সবসময়ই আলাদা।
তথ্য সূত্র: The Guardian