৬০ বছর পর: রুপার্টস থেকে স্নাতক হয়ে বৃদ্ধের নতুন ইতিহাস!

শিরোনাম: ৮৫ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি! অধ্যবসায়ের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসেও শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়ার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ৮৫ বছর বয়সী টম ম্যানিস্কালকো। ৬০ বছরেরও বেশি সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রের রু “টজার্স” বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু হার মানেননি। দীর্ঘকাল পর, জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় তিনি আবার ফিরেছেন শিক্ষাঙ্গনে। এবার রু “টজার্স” বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল বিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে চলেছেন তিনি। এর মাধ্যমে তিনি রু “টজার্স” বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারী হিসেবে নাম লেখাতে যাচ্ছেন।

নিউ জার্সির গারফিল্ডের বাসিন্দা টম ম্যানিস্কালকো-র শিক্ষাজীবনটা সবসময় মসৃণ ছিল না। একসময় পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হয় তাকে।

এরপর কর্মজীবনে প্রবেশ করেন তিনি। পরবর্তীতে, তিনি নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর, তিনি যন্ত্রকৌশল বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরেট ডিগ্রিও লাভ করেন।

টম জানান, রু “টজার্স”-এ পড়াশোনা শেষ করার একটা সুপ্ত বাসনা সবসময় তার মধ্যে ছিল। বিশেষ করে, তার বাবার খুব ইচ্ছে ছিল তিনি যেন এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি লাভ করেন।

অবসর জীবন শুরুর পর, অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই তার হাতে প্রচুর অবসর সময় আসে। সেই সময়েই তিনি আবার পড়াশোনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। রু “টজার্স” বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি বুঝতে পারছিলাম না এই অবসর সময়ে কী করব। তাই, আমি রু “টজার্স>-এ আবেদন করি এবং তারা আমাকে বিশেষ শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি নেয়।

এরপর, তিনি প্রতি সেমিস্টারে একটি করে কোর্স করতে শুরু করেন। মূলত অনলাইনে ক্লাস করতেন তিনি। এভাবে ধীরে ধীরে প্রয়োজনীয় ক্রেডিট জমা করে প্রকৌশল বিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের যোগ্যতা অর্জন করেন। টম আরও বলেন, “আমি একের পর এক কোর্স করতে থাকি।

এই ডিগ্রি অর্জনকে তিনি জীবনের এক পরিপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “এই ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে আমার বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ হবে, যিনি আমাকে রু “টজার্স>-এ প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করার জন্য পাঠিয়েছিলেন। আমি যেন আবার সেই শুরুতেই ফিরে এসেছি।

টমের এই অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং একাগ্রতাকে “অনুপ্রেরণীয়” হিসেবে বর্ণনা করেছেন রু “টজার্স” বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং তার উপদেষ্টা স্টিফেন সে। তিনি বলেন, “টমের সঙ্গে কথা বলার সময় আমার জীবনকে নতুন করে অনুভব করি। তার মতো মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়াটা আমার জন্য সৌভাগ্যের।

তিনি আরও যোগ করেন, “টম একজন সক্রিয় এবং মেধাবী শিক্ষার্থী। প্রকৌশলের মৌলিক বিষয়গুলো জানার জন্য তার আগ্রহ সত্যিই অসাধারণ।

পড়াশোনা শেষ হলেও, এখনই বিশ্রাম নিতে রাজি নন টম ম্যানিস্কালকো। তিনি এর পাশাপাশি এরো ডাইনামিক্স, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিমান এবং ইন্ডিয়ানাপলিস ৫০০ রেসিং কার নিয়ে কাজ করতে চান। এছাড়া, তিনি আমেরিকান সোসাইটি অফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স-এর স্থানীয় শাখার ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *