যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে ভোলেননি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন : আবেগঘন প্রতিক্রিয়া!

শিরোনাম: যুদ্ধের বিভীষিকা ও মুষ্টিযুদ্ধের ময়দান: ওলেক্সান্ডার উসিকের চোখে ইউক্রেন

ইউক্রেন যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যেই আসন্ন এক গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন ওলেক্সান্ডার উসিক। আগামী ১৯ জুলাই, গ্রেট ব্রিটেনের ড্যানিয়েল ডুবোয়ার বিরুদ্ধে তার এই লড়াই অনুষ্ঠিত হবে।

খেলাধুলার জগৎ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ—সবার কাছেই এই লড়াইয়ের গুরুত্ব অনেক। তবে এই মুহূর্তে, উসিকের মন জুড়ে রয়েছে নিজের দেশ ইউক্রেনের কথা।

স্পেনের গান্ডিয়া শহরে চলছে উসিকের প্রশিক্ষন। জায়গাটি দেখতে অনেকটা ক্রিমিয়ার মতো, যা ইউক্রেনেরই একটি অংশ, এবং ২০১৪ সালে রাশিয়া এর দখল নেয়।

এই শহরের আবহাওয়া আর প্রকৃতির সঙ্গে ক্রিমিয়ার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। প্রশিক্ষন কেন্দ্রেও ইউক্রেনের প্রতিচ্ছবি—হলুদ এবং নীল রঙে সজ্জিত দেওয়াল, অসংখ্য পতাকা, স্মারকচিহ্ন—যেন এক টুকরো ইউক্রেন।

যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পরিবারকে কিয়েভে রেখে আসায় মানসিক চাপ অনুভব করেন উসিক। তার দুই মেয়ে ও স্ত্রী এখনো সেখানেই আছেন।

তবে তিনি বিশ্বাস করেন, ইউক্রেনীয় সৈনিকরা তাদের রক্ষা করবে। তিনি বলেন, “আমার আত্মার মালিক ঈশ্বর, আর আমার শরীর ও সম্মান আমার দেশের জন্য।”

যুদ্ধ থেকে মনকে দূরে রাখতে চান তিনি, কারণ এতে মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে। কিন্তু দেশের প্রতি তার ভালোবাসা ও কর্তব্যবোধ তাকে সবসময় নাড়া দেয়।

তিনি ২০১৬ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগ দেন এবং বিভিন্ন সময়ে যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে সেনাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। সৈন্যদের মনোবল বাড়াতে চেষ্টা করেন, তাদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করেন।

সরাসরি খবর দেখা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলেন উসিক। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, এতে তার প্রস্তুতিতে সমস্যা হতে পারে। তবে সেনাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের মাধ্যমে দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত থাকেন তিনি।

সম্প্রতি, ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা বাহিনী (এসবিইউ)-এর প্রধানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি, যা দেশের জন্য তাদের সাহসী পদক্ষেপের স্বীকৃতিস্বরূপ।

খেলাধুলার জগতে, হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা বিশাল সম্মানের। আর উসিকের লক্ষ্য হলো, ড্যানিয়েল ডুবোয়ার বিপক্ষে জয়ী হয়ে বিশ্ব হেভিওয়েট খেতাব নিজের করে রাখা।

এই মুহূর্তে তার অপরাজিত রেকর্ড ২৩-০, যার মধ্যে ১৪টিতে তিনি নকআউট করেছেন।

যুদ্ধের এই কঠিন সময়ে, উসিক তার দেশকে ভোলেননি। তিনি ইউক্রেনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের হয়ে কথা বলেছেন। এমনকি, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছেও তিনি ইউক্রেনকে সমর্থন করার আবেদন জানিয়েছেন।

যুদ্ধ তার জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তিনি মনে করেন, দেশের এই সংকট তাকে আরও শক্তিশালী করেছে, দেশের জন্য কিছু করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। উসিক মনে করেন, তিনি শুধু নিজের জন্য লড়ছেন না, বরং দেশের মানুষের জন্য লড়ছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *