অলিভিয়া নিউটন-জন: রুপালি পর্দার নক্ষত্র থেকে ক্যান্সার সচেতনতার যোদ্ধা।
সঙ্গীত এবং অভিনয় জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন অলিভিয়া নিউটন-জন। বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করা এই কিংবদন্তী অভিনেত্রীর জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত একটি নতুন তথ্যচিত্র খুব শীঘ্রই মুক্তি পেতে যাচ্ছে, যা নেটফ্লিক্সে দেখা যাবে।
এই তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন অস্কার মনোনয়নপ্রাপ্ত পরিচালক নিকোল নিউনহ্যাম।
চলচ্চিত্রটি অলিভিয়ার সঙ্গীতজীবন, অভিনয়জীবন এবং একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তাঁর উত্থান ও খ্যাতির শিখরে আরোহণের গল্প বলবে। একই সঙ্গে, খ্যাতি অর্জনের পর তিনি যেসব কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন, সে বিষয়গুলোও এতে তুলে ধরা হবে।
ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহকর্মীদের স্মৃতিচারণ এবং দুর্লভ আর্কাইভ ফুটেজের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে তুলে ধরা হবে তাঁর জীবনের নানা দিক।
নির্মাতারা জানিয়েছেন, এই তথ্যচিত্রটি এমন একজন নারীর গল্প, যিনি তাঁর অসাধারণ প্রতিভার স্বীকৃতি পেতে অনেক বাধা অতিক্রম করেছেন।
প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, তিনি সবসময় নিজের আদর্শে অবিচল ছিলেন এবং অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর এই সংগ্রাম, সৌন্দর্য এবং ভালোবাসাপূর্ণ জীবনযাত্রা আমাদের সংস্কৃতিকে আরও সুন্দর করেছে।
অলিভিয়া নিউটন-জন সব সময়ই তাঁর চিঠির শেষে লিখতেন, ‘ভালোবাসা ও আলো’। তাঁর এই উজ্জ্বল উত্তরাধিকার আমাদের জন্য এক অমূল্য সম্পদ।
‘গ্রীস’-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেন। শুধু অভিনয় নয়, সঙ্গীতশিল্পী হিসেবেও তিনি ছিলেন সমান জনপ্রিয়।
১২ বার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন তিনি।
১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গ্রীস’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে অলিভিয়ার অভিনয় জীবন নতুন মোড় নেয়।
এরপর ‘জ্যানাডু’ (১৯৮০) এবং ‘টু অফ এ কাইন্ড’ (১৯৮৩) এর মতো চলচ্চিত্রেও তিনি অভিনয় করেন। তবে, অভিনয়ের পাশাপাশি সঙ্গীতের প্রতিও তাঁর মনোযোগ ছিল সবসময়।
স্তন ক্যান্সারের সঙ্গে তাঁর লড়াই ছিল অত্যন্ত কঠিন।
১৯৯২ সালে প্রথমবার তিনি এই মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হন। এরপর অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি এবং স্তন পুনর্গঠন-এর মতো চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে।
এই কঠিন সময়ে ক্যান্সার সচেতনতা এবং গবেষণার ওপর জোর দেন তিনি। তাঁর এই আগ্রহের ফলস্বরূপ মেলবোর্নে ‘অলিভিয়া নিউটন-জন ক্যান্সার ওয়েলনেস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’ প্রতিষ্ঠিত হয়।
২০২২ সালের আগস্টে, ৭৫ বছর বয়সে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর প্রয়াণে সঙ্গীত ও অভিনয় জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
তাঁর জীবন এবং কর্ম আজও মানুষকে আলো দেখায়, যা এই তথ্যচিত্রে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠবে।
তথ্য সূত্র: পিপল