পশ্চিমবঙ্গের কাছাকাছি একটি শান্তিময় স্থান!
সারা বিশ্বের প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য আমেরিকার ওলিম্পিক ন্যাশনাল পার্ক একটি অসাধারণ গন্তব্য। সিয়াটল থেকে মাত্র তিন ঘণ্টার পথ পাড়ি দিলেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই মনোমুগ্ধকর স্থানে।
এখানকার প্রধান আকর্ষণ হল হোহ রেইন ফরেস্ট, যেখানে আমেরিকার সবচেয়ে শান্ত স্থানটি অবস্থিত। কোলাহলমুক্ত পরিবেশে প্রকৃতির নীরবতা উপভোগ করতে যারা ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই স্থানটি আদর্শ।
ওলিম্পিক ন্যাশনাল পার্ক : প্রকৃতির এক অপরূপ লীলাভূমি
প্রায় ১০ লক্ষ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই পার্কটিতে রয়েছে বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রাকৃতিক দৃশ্য। এখানে একদিকে যেমন দেখা যায় বরফে ঢাকা পর্বতমালা, তেমনই অন্যদিকে রয়েছে সমুদ্র উপকূল এবং আল্পাইন তৃণভূমি।
এছাড়াও, উত্তর আমেরিকার কয়েকটি অবশিষ্ট নাতিশীতোষ্ণ বৃষ্টি-অরণ্যের মধ্যে অন্যতম হল এই পার্কটি।
হোহ রেইন ফরেস্ট : নীরবতার এক নতুন সংজ্ঞা
যারা প্রকৃতির নীরবতা ভালোবাসেন, তাদের জন্য হোহ রেইন ফরেস্ট যেন এক স্বর্গরাজ্য। এখানে ‘ওয়ান স্কয়ার ইঞ্চি অফ সাইলেন্স’ নামে পরিচিত একটি স্থান রয়েছে, যা কুইয়েট পার্কস ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শান্ত স্থান হিসেবে চিহ্নিত।
কোলাহলমুক্ত পরিবেশে গাছের ফাঁক দিয়ে আসা সূর্যের আলো এক মায়াবী পরিবেশ তৈরি করে। এখানে শব্দ দূষণ প্রায় নেই বললেই চলে, যা প্রকৃতির আরও গভীর অনুভূতি এনে দেয়।
কিভাবে যাবেন?
ওলিম্পিক ন্যাশনাল পার্কে যাওয়ার সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর হল সিয়াটল-টাকোমা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (SEA)। সিয়াটল থেকে গাড়িতে করে প্রায় তিন ঘণ্টার পথ পেরিয়ে অথবা ফেরিতে করে যাওয়া যায়।
ফেরিতে করে গেলে সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করা যায় এবং তিমি মাছ দেখারও সুযোগ থাকে। এছাড়া, কানাডার ভ্যানকুভার আইল্যান্ডে অবস্থিত ভিক্টোরিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (YYJ) পৌঁছে ব্ল্যাক বল ফেরি লাইনের মাধ্যমেও এখানে আসা যেতে পারে।
ঘুরে দেখবার মতো স্থান
- হোহ রেইন ফরেস্ট: ঘন সবুজ গাছপালা আর শান্ত পরিবেশে হেঁটে বেড়ানোর মজাই আলাদা। এখানকার ‘হল অফ মসিস’ এবং ‘হোহ রিভার ট্রেইল’ পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
- রিয়েল্টো বিচ: সমুদ্রের ধারে বিশাল পাথরের স্তূপ, ঢেউ এবং সমুদ্র সৈকত এখানকার প্রধান আকর্ষণ। এখানে সি-আর্চ এবং বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী দেখা যায়।
- হারিকেন রিজ: এখানকার পাহাড়ের চূড়া থেকে পুরো ওলিম্পিক পর্বতমালা দেখা যায়। এখানে আলপাইন তৃণভূমিতে হেঁটে বেড়ানোও একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
- হ্রদ এবং জলপ্রপাত: লেক ক্রিসেন্ট, লেক ওজেট, এবং সল ডুক জলপ্রপাতের মতো স্থানগুলোতে সাঁতার কাটা, নৌকা চালানো বা জলপ্রপাতের সৌন্দর্য উপভোগ করা যেতে পারে।
কখন যাবেন?
জুন থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ওলিম্পিক ন্যাশনাল পার্ক ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। এই সময়ে বৃষ্টি কম হয় এবং আবহাওয়া বেশ উষ্ণ থাকে।
তবে, শীতকালে এখানে তুষারপাতের কারণে অনেক রাস্তা বন্ধ থাকে।
থাকার ব্যবস্থা
এখানে থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের বিকল্প রয়েছে। পার্কের ভিতরে এবং বাইরে, উভয় জায়গাতেই থাকার ব্যবস্থা আছে। কালারচ লজ, সল ডুক হট স্প্রিংস রিসোর্ট এবং লেক কুইনাল্ট লজের মতো জায়গায় আপনি থাকতে পারেন।
খাবার-দাবারের ব্যবস্থা
এখানে বিভিন্ন ধরনের রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যেখানে স্থানীয় খাবার পাওয়া যায়। লেক কুইনাল্ট-এর কাছে অবস্থিত স্যালমন হাউস রেস্টুরেন্টে স্যামন মাছের নানা পদ উপভোগ করা যেতে পারে।
এছাড়াও, স্যালটি গার্লস-এর মতো সি-ফুড রেস্টুরেন্টেও মুখরোচক খাবার পাওয়া যায়।
প্রকৃতির কাছাকাছি, কোলাহলমুক্ত পরিবেশে কিছু সময় কাটানোর জন্য ওলিম্পিক ন্যাশনাল পার্ক হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য।
তথ্যসূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার।