রহস্য উন্মোচন! ওরেগনের জীবাশ্ম পদচিহ্ন, অতীতের অজানা গল্প!

অরগনে পাওয়া জীবাশ্ম পায়ের ছাপ, যা অতীতের প্রাণীদের আচরণ উন্মোচন করে।

ভূ-বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন অঙ্গরাজ্যে (Oregon) পাওয়া কিছু জীবাশ্ম পায়ের ছাপ বিশ্লেষণ করে প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছেন। এই আবিষ্কারগুলি শুধু সেই অঞ্চলের অতীতের পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা দেয় না, বরং বাংলাদেশেও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

প্রায় ৫০ মিলিয়ন বছর আগের ইওসিন যুগে (Eocene Epoch) অরেগনের একটি হ্রদের ধারে হেঁটে বেড়ানো পাখির পায়ের ছাপ খুঁজে পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই পায়ের ছাপগুলি সেই সময়ের পাখির খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার প্রমাণ বহন করে।

পায়ের ছাপের কাছে পাওয়া কিছু ছোট গোলাকার চিহ্ন দেখে গবেষকরা ধারণা করছেন, পাখিটি হয়তো পোকামাকড়ের সন্ধানে তার ঠোঁট ব্যবহার করত। আধুনিককালের কিছু পাখির আচরণ পর্যবেক্ষণ করে তারা এই ধারণার সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন।

এই গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছে ত্রিমাত্রিক (3D) মডেলিং প্রযুক্তি। বিজ্ঞানীরা শত শত ছবি ব্যবহার করে পায়ের ছাপগুলির ডিজিটাল চিত্র তৈরি করেছেন, যা তাদের বিস্তারিতভাবে পর্যবেক্ষণে সাহায্য করেছে।

এই পদ্ধতিতে, খুব ছোট আকারের জীবাশ্মগুলিও স্পষ্টভাবে দেখা এবং বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়েছে।

শুধু পাখি নয়, সেই সময়ের অন্যান্য প্রাণীর পায়ের ছাপও বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে একটি ছোট আকারের সরীসৃপ এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীর পায়ের ছাপ।

সরীসৃপের পায়ের ছাপগুলি থেকে বোঝা যায়, সেই সময়ে ওই অঞ্চলে তাদের বসবাস ছিল, যদিও এখন পর্যন্ত কোনো কঙ্কাল পাওয়া যায়নি। স্তন্যপায়ী প্রাণীর পায়ের ছাপ বিশ্লেষণ করে গবেষকরা তাদের গতিবিধি এবং সম্ভাব্য খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে ধারণা লাভ করেছেন।

একটি পায়ের ছাপ সম্ভবত একটি স্যাবার-টুথড বিড়ালের (saber-toothed cat) পায়ের, যা সেই সময়ের পরিবেশের একটি চিত্র দেয়।

এই গবেষণাটি ‘ট্রেস ফসিল’ বা পায়ের ছাপের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে। সাধারণত, জীবাশ্ম আবিষ্কারের ক্ষেত্রে হাড় বা কঙ্কালের (bone fossils) ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

কিন্তু পায়ের ছাপগুলি সেই সময়ের প্রাণীদের আচরণ এবং পরিবেশ সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সরবরাহ করে।

গবেষকরা বলছেন, এই ধরনের আবিষ্কারগুলি বাংলাদেশেও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার সম্ভাবনা বাড়ায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে যেখানে উপযুক্ত শিলাস্তর (rock formations) রয়েছে, সেখানেও এই ধরনের জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা অতীতের প্রাণী ও পরিবেশ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন। এছাড়াও, এই ধরনের গবেষণা আমাদের দেশের ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসকে নতুনভাবে মূল্যায়ন করতে সাহায্য করবে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *