যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ দাবানল, ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা।
যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যে একটি বিশাল দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যার ফলে শত শত মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে ওয়াসকো কাউন্টিতে ‘রোয়েনা’ নামের এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। তীব্র বাতাস ও উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে আগুন দ্রুত আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ছে।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত খবর অনুযায়ী, আগুনে প্রায় ২,৫০০ একর এলাকা পুড়ে গেছে। দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন, তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। বর্তমানে আগুন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবার রাতে ওয়াসকো কাউন্টির উত্তরে আট শতাধিক পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, প্রায় আড়াই হাজার পরিবারের সদস্যদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে, যেকোনো সময় তাদেরও সরে যেতে হতে পারে। এই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে রয়েছে ড্যালের মতো জনবহুল শহর, যেখানে প্রায় ১৫,০০০ মানুষের বসবাস।
আগুনের কারণে বুধবার সন্ধ্যায় প্রায় ২০ মাইল পর্যন্ত আন্তঃরাজ্যীয় মহাসড়ক I-84 বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তবে বৃহস্পতিবার সকালে তা পুনরায় চালু করা হয়েছে। তবে, কর্তৃপক্ষ ভ্রমণকারীদেরকে সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়াও, ইউএস-৩০ নামের একটি সড়কও প্রায় ১০ মাইল পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে।
ওরেগনের গভর্নর টিনা কোটেক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং অগ্নিনির্বাপণের জন্য জরুরি সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘোষণার ফলে রাজ্যের দমকল বিভাগ আগুন নেভানোর কাজে আরও বেশি সম্পদ ব্যবহার করতে পারবে।
রাজ্যের ফায়ার মার্শালের মতে, গ্রীষ্মের শুরুতেই এই ধরনের দাবানল একটি উদ্বেগের বিষয়। তিনি জনসাধারণকে সতর্ক থাকার এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দিন ধরে দমকা হাওয়া বইতে পারে, যা আগুন নেভানোর কাজে আরও বেশি চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। বুধবার বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ মাইল। বৃহস্পতিবার সকালে বাতাসের গতি কিছুটা কম থাকলেও, বিকেলে তা আরও বাড়তে পারে। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এই অঞ্চলের তীব্র গরম আবহাওয়া পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। গত রবিবার এবং সোমবার ড্যালের তাপমাত্রা ছিল ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি, যা অতীতের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুষ্ক আবহাওয়া ও তীব্র গরমের কারণে গাছপালা দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে, ফলে আগুনের বিস্তার ঘটছে সহজে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন