বেলজিয়ামের সৈকত: ওসেন্দের অজানা আকর্ষণ!

বেলজিয়ামের সমুদ্র শহর: ওস্টেন্ডে ভ্রমণের আকর্ষণ। ইউরোপের একটি সুন্দর দেশ হল বেলজিয়াম।

এখানকার ওস্টেন্ড শহরটি সমুদ্রের ধারে অবস্থিত হওয়ায় ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই শহরটি বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।

তবে কালের বিবর্তনে পুরনো এবং আধুনিক স্থাপত্যের এক দারুণ মিশ্রণ ঘটেছে এখানে। একদিকে যেমন রয়েছে পুরনো দিনের “বেল এপোক” যুগের বাড়িঘর, তেমনই আবার আধুনিক স্থাপত্যের উজ্জ্বল নিদর্শনও চোখে পড়ে।

ওস্টেন্ড শহরের প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল “অ্যালবার্ট প্রথম প্রমনেড”। এটি সমুদ্র সৈকতের পাশ দিয়ে বিস্তৃত এবং গ্রীষ্মকালে এখানে বিভিন্ন ধরণের বার খোলা হয়।

এছাড়াও, এখানে নানান ধরনের শিল্পকর্মও দেখা যায়। প্রমনেডের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে “রক স্ট্রেঞ্জারস” নামে পরিচিত কিছু লাল রঙের মূর্তি, যা পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

এছাড়াও, শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত “সেন্ট পিটার্স-এন-পাউলুসকার্ক” নামক গির্জাটিও একটি উল্লেখযোগ্য স্থান।

ওস্টেন্ড শহরের পুরনো স্থাপত্যের মধ্যে অন্যতম হল “স্প্যানিশ ইন”। এটি একটি পুরনো দিনের বার, যেখানে লাইভ মিউজিকের আসর বসে।

এখানকার স্থানীয় লোকেরা, বিশেষ করে তরুণ যুগল এবং বয়স্করা, একসাথে গান উপভোগ করেন।

যারা ভোজনরসিক, তাদের জন্য ওস্টেন্ডে রয়েছে “ভিসারস্কাই” নামক একটি জায়গা, যেখানে জেলেদের মাছ ধরার স্থান বিদ্যমান। এখানে নানা ধরণের সি-ফুড পাওয়া যায়।

এছাড়া, “ম্যাঞ্জ টু” নামক একটি রেস্টুরেন্টেও সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। প্রতি ছয় সপ্তাহ অন্তর এখানকার মেনু পরিবর্তন করা হয়।

ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনের আগ্রহীদের জন্য এখানে রয়েছে “ফোর্ট নেপোলিয়ন”। নেপোলিয়নের আমলে এটি তৈরি করা হয়েছিল, তবে এখানে কোনো যুদ্ধ হয়নি।

এখানকার অডিও গাইডে সৈন্যদের একাকীত্বের গল্প শোনা যায়। এছাড়া, “মার্কেটর” নামের একটি পুরনো বেলজিয়ান জাহাজও এখানে দেখা যেতে পারে।

ওস্টেন্ড শহরটি শিল্পী জেমস এনসরের জন্য সুপরিচিত। তাঁর সম্মানে এখানে “মু.জেড” নামক একটি জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ১৮৮০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বেলজিয়ান শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়।

জেমস এনসরের বাসভবনটিও এখানে দেখা যায়।

শহরটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে “দ্য ক্রিস্টাল শিপ”। এখানে বিভিন্ন দেয়ালে বিশাল আকারের ছবি আঁকা হয়েছে, যা শহরটিকে একটি উন্মুক্ত আর্ট গ্যালারিতে পরিণত করেছে।

এই ছবিগুলো দেখতে একটি অ্যাপও ব্যবহার করা যেতে পারে।

রাতের বেলা ওস্টেন্ডের নাইট লাইফ উপভোগ করার জন্য “ল্যাফেয়েত” বারটি একটি চমৎকার জায়গা। এখানে জ্যাজ ও সোলের গান শোনা যায়।

এই বারে মারভিন গায়ের একটি ছবিও রয়েছে, যিনি একসময় এখানে ১৮ মাস ছিলেন এবং “সেক্সুয়াল হিলিং” গানটি রচনা করেছিলেন।

মারভিন গায়ের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো ঘুরে দেখার জন্য একটি “মিডনাইট লাভ ট্যুর”ও আয়োজন করা হয়।

ওস্টেন্ড শহরটি বেলজিয়ামের একটি অন্যতম সুন্দর শহর। যারা সমুদ্র ভালোবাসেন এবং একইসঙ্গে শিল্পের প্রতি অনুরাগী, তাদের জন্য এই শহরটি হতে পারে একটি আদর্শ গন্তব্য।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *