ড্রাগস আর সহিংসতার মাঝে বেড়ে ওঠা ওটি’র জীবনে নাচের গুরুত্ব!

ওটি মাবুসে: কঠোর পরিশ্রম আর নাচের প্রতি ভালোবাসাই এনেছে সাফল্য

নৃত্যশিল্পী ওটি মাবুসে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব লাভ করেছেন।

কঠোর পরিশ্রমী ও সকলের প্রিয় এই নৃত্যশিল্পীর নাচের প্রতি ভালোবাসা এবং সাফল্যের গল্প অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণাদায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকায় বেড়ে ওঠা ওটির নাচের প্রতি আগ্রহ ছিল ছোটবেলা থেকেই।

তার মা ছিলেন শিক্ষক, যিনি নিজে নাচের ক্লাস চালাতেন। ওটির দুই বোনও ছিলেন নৃত্যশিল্পী। মায়ের অনুপ্রেরণায় ওটি মাত্র চার বছর বয়স থেকে নাচ শুরু করেন।

ওটি জানান, তাদের পরিবারে নাচের চর্চা ছিল অনেক আগে থেকেই। দক্ষিণ আফ্রিকার সংস্কৃতিতে নাচের একটা বিশেষ স্থান রয়েছে।

তাদের বেড়ে ওঠা ছিল কঠিন পরিবেশে। সেখানকার আশেপাশে মাদক ও সহিংসতার প্রভাব ছিল, তাই মা তাদের নাচের প্রতি মনোযোগী করেন।

নাচের মাধ্যমে তারা যেন বাইরের খারাপ প্রভাব থেকে দূরে থাকতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতেন তিনি। ওটি মনে করেন, নাচের মাধ্যমে তারা তাদের ভেতরের কষ্ট ও দুঃখকে প্রকাশ করতে পারতেন।

ছোটবেলায় ওটি বিভিন্ন নাচের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। একবার তিনি ব্ল্যাকপুলে একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন।

তখন খাবারের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। তিনি ফিশ অ্যান্ড চিপস, স্যান্ডউইচ খুব পছন্দ করতেন। নাচের প্রতি তার একাগ্রতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

তিনি সবসময় চাইতেন, তার পারফর্মেন্স হোক সেরা। ওটির বাবা-মা দুজনেই কঠিন পরিস্থিতি থেকে উঠে এসেছেন।

তারা সবসময় তাদের সন্তানদের ভালো ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেন। ওটির বাবা ছিলেন একজন আইনজীবী এবং বর্তমানে তিনি একটি হাইকোর্টের বিচারক।

তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। বাবা-মায়ের কাছ থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস ও কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা ওটিকে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।

ওটি সবসময় চেষ্টা করেছেন, কিভাবে নিজের সেরাটা দেওয়া যায়। নাচের কারণে ওটি জীবনে অনেক কিছু পেয়েছেন।

তিনি একজন ভালো নৃত্যশিল্পী হওয়ার পাশাপাশি একটি সুন্দর পরিবারেরও স্বপ্ন দেখেন। তার মতে, নাচের মাধ্যমে জীবনের নেতিবাচক অনুভূতিগুলো দূর করা যায়।

বর্তমানে ওটি তার নতুন নৃত্য সফর ‘ভিভা কার্নিভাল’-এর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগে তিনি ‘আই অ্যাম হিয়ার’ নামে একটি শো করেছিলেন, যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকায় তার বেড়ে ওঠা এবং জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছিলেন।

ওটি বিভিন্ন দেশের উৎসব ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে ভালোবাসেন। মা হওয়ার পর ওটির জীবনে নতুন পরিবর্তন এসেছে।

মাতৃত্ব তাকে আরও বেশি শক্তিশালী করেছে। তিনি চান, তার সন্তান যেন তার কাজ দেখে গর্বিত হয়।

শরীরের পরিবর্তনের কারণে তিনি আগের মতো ততটা শক্তিশালী নন, তবে তিনি খুব দ্রুত আগের রূপে ফিরতে চান।

ওটি মাবুসের কঠোর পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস এবং নাচের প্রতি ভালোবাসাই তাকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *