যুদ্ধ থামলেও শঙ্কা! পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের কথা ভাবেনি পাকিস্তান, জানালো মন্ত্রী

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধবিরতি: কাশ্মীর সংকট এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা

গত কয়েকদিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলা তীব্র উত্তেজনার পর অবশেষে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সম্পন্ন হয়েছে। উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় এই অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা বিবেচনা করেননি। তিনি দীর্ঘমেয়াদী শান্তির জন্য কাশ্মীর ইস্যুটির দ্রুত সমাধানের ওপর জোর দিয়েছেন।

অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভবিষ্যতে কোনো সন্ত্রাসী হামলার জবাব দিতে প্রস্তুত থাকার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

গত সপ্তাহের সংঘর্ষ ছিল ১৯৭i সালের পর দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক সংঘাত। উভয় পক্ষই সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে, যাতে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।

সংঘাতের সূত্রপাত হয় ভারতের পক্ষ থেকে, যা পাকিস্তানের ভূখণ্ডে হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও পাল্টা আঘাত হানে। পাকিস্তানের দাবি, তারা তাদের আকাশ সীমায় চীনা যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের অন্তত একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।

যদিও ভারতের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

সংবাদ সংস্থা সিএনএন-এর সাথে আলাপকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, কাশ্মীর সমস্যাই এই অঞ্চলের অস্থিতিশীলতার মূল কারণ। তিনি কাশ্মীর অঞ্চলের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানান।

জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিবাদ বহু পুরনো। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় থেকেই এই অঞ্চলের মালিকানা নিয়ে দুই দেশ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। বর্তমানে কাশ্মীর বিশ্বের সবচেয়ে সামরিকীকৃত অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দার আরো বলেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনা এখনো চলছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, উভয় পক্ষই আলোচনার মাধ্যমে একটি সম্মানজনক সমাধানে পৌঁছাতে পারবে।

যুদ্ধবিরতির আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন-এর মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছিল।

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে এবং ভবিষ্যতে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলা হলে তার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভারত কোনো ধরনের পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল সহ্য করবে না।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা চায় দ্রুত কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হোক। কারণ এই অঞ্চলের জল নিয়েও দুই দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। পাকিস্তানের আশঙ্কা, কাশ্মীর নদীর জল সরবরাহ বন্ধ করে দিলে তা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে।

এই অঞ্চলের পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার যেকোনো ধরনের উত্তেজনা বাংলাদেশের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *