আফগান শরণার্থীদের জন্য অবশেষে সীমান্ত খুলল পাকিস্তান!

পাকিস্তানের সীমান্ত আংশিকভাবে খোলার ফলে আফগান শরণার্থীদের দেশে ফেরার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের সীমান্ত পথে চলাচল এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়ার প্রায় তিন সপ্তাহ পর, অবশেষে কিছু শর্তসাপেক্ষে সীমান্ত আংশিকভাবে খোলা হয়েছে। এর ফলে, সেখানে আটকে পড়া হাজার হাজার আফগান শরণার্থী তাদের দেশে ফিরতে পারছেন।

গত ১২ই অক্টোবর, উভয় দেশের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে সেনা হতাহতের অভিযোগ এনেছিল। এই ঘটনার পরে, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গিয়েছিল এবং সীমান্ত এলাকায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল।

আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকেই, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে, পাকিস্তানের অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন অভিযান একটি বড় উদ্বেগের কারণ। এই বিতাড়ন অভিযানের অংশ হিসেবে, ২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষাধিক আফগানকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

পাকিস্তানের সীমান্ত আংশিকভাবে খোলার সিদ্ধান্ত আসে, যখন দুই দেশের মধ্যে তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এর আগে, উভয় পক্ষই সীমান্তে ব্যাপক সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে। কাতারে অনুষ্ঠিত আলোচনায় উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে রাজি হয়।

তবে, সীমান্ত আংশিকভাবে খোলা হলেও, বাণিজ্যিকভাবে পণ্য আনা-নেওয়া এখনো বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, শুধুমাত্র আফগান শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, স্থানীয় কর্মকর্তারা এবং আফগান সেনারা তেরখাম গেটের কাছে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং দেশে ফেরা শরণার্থীদের স্বাগত জানাচ্ছেন।

আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত, আহমদ শাকিব, সামাজিক মাধ্যমে অভিযোগ করেছিলেন যে, পাকিস্তানের সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে অনেক আফগান শরণার্থী আটকা পড়ে আছেন। যদিও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাষ্ট্রদূত সামাজিক মাধ্যমে অভিযোগ জানানোর পরিবর্তে, তাদের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে যোগাযোগ করতে পারতেন।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, তারা আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে পাকিস্তানি তালেবানদের আস্তানায় বিমান হামলা চালিয়েছে, যেখানে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে। যদিও আফগান কর্মকর্তারা এই দাবি অস্বীকার করে বলেছেন, হামলায় সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে এবং এর জবাবে তারা পাকিস্তানি সামরিক পোস্টগুলোতে হামলা চালিয়েছে, যাতে ৫৮ জন সৈন্য নিহত হয়েছে।

বর্তমানে, সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য উভয় দেশই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি, যা বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *