পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে একটি স্কুল বাসে বোমা হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে তিনজন শিশুও রয়েছে। বুধবার খোজদার জেলার এই ঘটনায় আহত হয়েছে আরও প্রায় আটত্রিশ জন।
সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি পাবলিক স্কুলের শিশুদের নিয়ে যাওয়ার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এই ঘটনার জন্য ‘ভারতীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’কে দায়ী করেছে, তবে তারা এর স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। ভারতের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
খোজদারের ‘জিরো পয়েন্ট’ এলাকায় হওয়া এই বোমা হামলায় শোক প্রকাশ করে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি নিহতদের প্রতি গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “শত্রুরা শিশুদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে।
স্কুল বাসে হামলা দেশের অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য শত্রুদের একটি ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র।”
আঞ্চলিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের তীব্রতার কারণে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি।
বেলুচিস্তান খনিজ সম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ একটি প্রদেশ। দীর্ঘদিন ধরে এখানে সরকার ও বিচ্ছিন্নতাবাদী বেলুচ সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত চলছে।
বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা চায়।
এই হামলার কয়েক দিন আগে, বেলুচিস্তানের কিল্লা আবদুল্লাহর একটি বাজারের কাছে গাড়ি বোমা হামলায় চারজন নিহত হয়েছিল। বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) প্রায়ই এই অঞ্চলে হামলার দায় স্বীকার করে থাকে।
পাকিস্তান সরকার বিএলএকে প্রতিবেশী ভারতের মদদপুষ্ট একটি গোষ্ঠী হিসেবে মনে করে, যদিও ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মার্চ মাসে বেলুচিস্তানে একটি ট্রেনে চালানো হামলায় বিএলএ জঙ্গিরা ৩৩ জন, যাদের অধিকাংশই সেনা সদস্য ছিল, তাদের হত্যা করে।
চলতি সপ্তাহে বিএলএ ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীদের’ ওপর আরও হামলার হুমকি দিয়েছে এবং তারা একটি স্বাধীন বেলুচিস্তান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে।
পাকিস্তানে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা নতুন নয়। তবে, সাধারণত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা স্কুল-শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় না।
এর আগে, দেশের উত্তর-পশ্চিম এবং অন্যান্য স্থানে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) পেশোয়ারে আর্মি পাবলিক স্কুলে হামলা চালিয়ে ১৪০ জনের বেশি শিশুকে হত্যা করে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা