পামেলা এন্ডারসন: দ্বীপের বাগানে খুঁজে পাওয়া শান্তি ও নতুন জীবনের সন্ধান
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পামেলা এন্ডারসন প্রকৃতির কাছাকাছি ফিরে এসে যেন নতুন জীবন খুঁজে পেয়েছেন। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ভ্যাঙ্কুভার দ্বীপে অবস্থিত নিজের পারিবারিক জমিতে ফিরে আসার পর বাগান করা তাঁর জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। এই বাগানই যেন তাঁর কাছে “সবকিছু আবার একসঙ্গে ফিরে আসার জায়গা”।
২০২০ সালে এন্ডারসন তাঁর পরিবারের পুরনো ভিটায় ফিরে আসেন, যা ‘আর্কেডি’ নামে পরিচিত। এই ফিরে আসাটা ছিল যেন নিজের ‘হারিয়ে যাওয়া সত্তাকে’ খুঁজে বের করার এক প্রয়াস। এই সময়ে প্রকৃতির প্রতি তাঁর ভালোবাসা আরও গভীর হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “আমি যখন উপলব্ধি করলাম, একটি ঝোপ থেকে ব্ল্যাকবেরি বা একটি গাছ থেকে ক্র্যাবঅ্যাপেল খাওয়া যায়, তখন আমার মনে হলো, খাদ্য আসে মাটি থেকে, পৃথিবী থেকে। আমি বুঝতে পারলাম, আমার নিজের একটা বাগান থাকতে পারে।”
বর্তমানে তাঁর বাগানে বুনো ফুল থেকে শুরু করে ভেষজ এবং সবজির চাষ হয়। এই বাগানে তিনি গোলাপ এবং ঐতিহ্যবাহী টমেটোর মতো বিভিন্ন ধরণের গাছ লাগিয়েছেন। অভিনেত্রী জানান, তাঁর ‘ইভস পিয়াগেট রোজ’ খুব প্রিয়, আর গোলাপের পাপড়ি থেকে তিনি নিজের জন্য তেল তৈরি করেন। তাঁর বাগানের উৎপাদিত সবজি স্থানীয় খাদ্য ব্যাংক, স্যুপ রান্নাঘর এবং চার্চগুলোতেও বিতরণ করা হয়।
এন্ডারসনের বাগানটি প্রচলিত ধারণার চেয়ে অনেক আলাদা। তিনি এর বর্ণনা করেছেন “আগ্নেয়গিরির মতো” এবং “আকর্ষণীয় ঘূর্ণি” হিসাবে। এমনকি তাঁর বাগানের মালীও বলেন, “আমি জানি না এই বাগানে কি হয়, তবে এটা খুবই আনন্দদায়ক।” অভিনেত্রী মনে করেন, বাগানে কাজ করা, এমনকি খালি পায়ে হেঁটে বেড়ানো, তাঁকে তাঁর নিজের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে। এটি তাঁর আত্ম-অনুসন্ধানের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক।
পামেলা এন্ডারসনের এই বাগান শুধু তাঁর ব্যক্তিগত জীবনকেই প্রভাবিত করেনি, বরং তাঁর কাজের উপরেও এর প্রভাব পড়েছে। এই বাগান নিয়ে নির্মিত একটি টেলিভিশন সিরিজে কাজ করার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি জানান, প্রথম সিজনে তিনি কিছুটা হতাশ ছিলেন। তবে দ্বিতীয় সিজনে তিনি আত্ম-অনুসন্ধান, সত্য এবং নিজের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি এখন তাঁর নিজের দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখে কাজ করছেন এবং এটিকে একটি ইতিবাচক অভিজ্ঞতায় পরিণত করেছেন।
বাগানের এই জীবন তাঁকে দিয়েছে নতুন পথের দিশা। প্রকৃতির কাছাকাছি আসার এই যাত্রা একদিকে যেমন তাঁকে শান্তি এনে দিয়েছে, তেমনই নতুন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম