শল্কী ইঁদুরের করুন দশা: ছবিতে মোড়ানো বিশ্বের সবচেয়ে চোরাচালান হওয়া প্রাণী!

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি চোরাচালান হওয়া স্তন্যপায়ী প্রাণী, প্যাঙ্গোলিন এখন বিলুপ্তির পথে। এদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে ‘রিমেম্বারিং ওয়াইল্ডলাইফ’ নামের একটি সংস্থা। সম্প্রতি তারা এই বিরল প্রাণীটিকে নিয়ে একটি আলোকচিত্রের বই প্রকাশ করেছে, যার নাম ‘১০ ইয়ার্স অফ রিমেম্বারিং ওয়াইল্ডলাইফ’। মূলত প্যাঙ্গোলিনের ছবি এবং এদের সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়াতে এই উদ্যোগ।

প্যাঙ্গোলিন দেখতে অনেকটা সরীসৃপের মতো, সারা শরীর শক্ত আঁশ দিয়ে ঢাকা, যা তাদের বর্মের মতো সুরক্ষা দেয়। এদের লম্বা, আঠালো জিহ্বা থাকে, যা দিয়ে এরা পোকামাকড় শিকার করে। এদের আটটি প্রজাতি এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন)-এর মতে, এই প্রাণীগুলো বিভিন্ন মাত্রায় হুমকির সম্মুখীন।

প্যাঙ্গোলিনের প্রধান হুমকি হলো চোরাচালান। মাংস এবং আঁশের জন্য এদের শিকার করা হয়। ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধে এদের আঁশ ব্যবহারের ভুল ধারণা রয়েছে, যদিও এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। চোরাচালানের কারণে ২০১০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১ লক্ষ ৩৬ হাজারের বেশি প্যাঙ্গোলিন পাচার হয়েছে।

চোরাচালানের সবচেয়ে বড় বাজার হলো চীন।

‘রিমেম্বারিং ওয়াইল্ডলাইফ’-এর প্রতিষ্ঠাতা মার্গট র‍্যাগেটের মতে, চোরাচালানের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে তার প্রতিষ্ঠিত প্রকল্পের ১০ বছরে প্রায় ১০ লক্ষ প্যাঙ্গোলিন শিকার হয়ে যাবে।

মার্গট র‍্যাগেট

র‍্যাগেটের মতে, “বিষয়টি উপলব্ধি করার পর আমি সত্যিই খারাপ অনুভব করেছি। প্যাঙ্গোলিনদের প্রতি আমি দুঃখিত যে, তাদের নিয়ে কাজ করতে এত দেরি হয়ে গেল।”

দক্ষিণ আফ্রিকায় ইলেক্ট্রিক বেড়াগুলোও প্যাঙ্গোলিনের জন্য বিপদ ডেকে আনে। আত্মরক্ষার জন্য এরা যখন গুটিয়ে যায়, তখন ইলেক্ট্রিক তারের সংস্পর্শে এসে আহত হয়।

বন্য পরিবেশে প্যাঙ্গোলিন সহজে দেখা যায় না বলে এদের সম্পর্কে খুব বেশি তথ্যও পাওয়া যায় না। আলোকচিত্রী ট্রিস্টান ডিক্স জানান, ১৭ বছরের পেশাগত জীবনে তিনি মাত্র ১৫টি প্যাঙ্গোলিন দেখেছেন।

এই আলোকচিত্রের বইটির মাধ্যমে প্যাঙ্গোলিন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এদের সংরক্ষণে সহায়তা করাই মূল লক্ষ্য। বর্তমানে, এই বইটি থেকে প্রাপ্ত অর্থ সংরক্ষণ বিষয়ক বিভিন্ন কাজে ব্যয় করা হবে।

প্যাঙ্গোলিন সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। আমাদের সকলেরই এই বিষয়ে অবগত হওয়া উচিত এবং এদের রক্ষার জন্য এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *