বিখ্যাত কমেডি অভিনেতা পল রুবেন্স, যিনি ‘পি-উই হারম্যান’ চরিত্রের জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত, তাঁর জীবনের অজানা গল্প এবার পর্দায়। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত তথ্যচিত্র ‘পি-উই অ্যাজ হিমসেলফ’-এ (Pee-wee as Himself) অভিনেতা পল রুবেন্সের জীবনের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে।
এই তথ্যচিত্র নির্মাণ করতে গিয়ে পরিচালক ম্যাট উলফকে (Matt Wolf) বেশ কিছু কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়েছে।
২০২৩ সালের ৩১শে জুলাই, পল রুবেন্সের মৃত্যুর খবর আসে, যা পরিচালক ম্যাট উলফকে এক গভীর ধাক্কা দেয়। কারণ, রুবেন্সের সঙ্গে প্রায় এক বছর ধরে এই তথ্যচিত্রটি নির্মাণের জন্য কথা বলছিলেন তিনি।
তাঁদের মধ্যে ৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ক্যামেরার সামনে কথা হয়েছিল। কিন্তু রুবেন্স তাঁর অসুস্থতার কথা পরিচালককে জানাননি। তিনি যে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত ছয় বছর ধরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন, সে বিষয়ে ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পাওয়া যায়নি।
তথ্যচিত্রটি তৈরির সময়ে দু’জনের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়, বিশেষ করে সৃজনশীল স্বাধীনতা নিয়ে। রুবেন্স চেয়েছিলেন, তথ্যচিত্রের পরিচালনা যেন তাঁর হাতেই থাকে।
কিন্তু পরিচালক ম্যাট উলফ চেয়েছিলেন, এই কাজটি তিনি নিজে করতে। অবশেষে তাঁরা একটি সমাধানে পৌঁছান। উলফ জানিয়েছেন, রুবেন্স ছিলেন তাঁর দেখা সবচেয়ে কঠিন ইন্টারভিউ সাবজেক্ট। তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, আবেগপূর্ণ এবং কঠিন।
এই তথ্যচিত্রে পি-উই হারম্যানের চরিত্র সৃষ্টির পেছনের গল্প, তাঁর শৈশব, খ্যাতির জটিলতা, যৌনজীবন এবং ১৯৯১ সালের একটি ঘটনার কথা তুলে ধরা হয়েছে, যা তাঁর ক্যারিয়ারে খারাপ প্রভাব ফেলেছিল।
পরিচালক উলফ জানিয়েছেন, তিনি সেলিব্রিটি বায়োপিকের গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, পল রুবেন্সকে একজন শিল্পী হিসেবে তুলে ধরতে, তাঁর জীবনের গভীরতা এবং সংগ্রামের দিকগুলো ফুটিয়ে তুলতে।
তথ্যচিত্রটি নির্মাণের সময় পরিচালক রুবেন্সের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গভীরতা অনুভব করেছেন। রুবেন্স ব্যক্তিগত জীবনে কেমন ছিলেন, খ্যাতি তাঁকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে, এসব বিষয়ও এই ছবিতে উঠে এসেছে।
সুনড্যান্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে (Sundance Film Festival) ছবিটির প্রিমিয়ার হয়। সেখানে দর্শক-মনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল এই তথ্যচিত্র।
পল রুবেন্সের জীবনের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার এক মিশ্র অনুভূতি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল এই ছবি।
তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস