ফুটবল ইতিহাসের এক কিংবদন্তি, পেলে। তাঁর হাজারতম গোলের স্মৃতি আজও ফুটবল প্রেমীদের মনে গেঁথে আছে। তবে সেই ঐতিহাসিক গোলটি নিয়ে রয়েছে বিতর্ক।
আসলে, পেলে তাঁর ক্যারিয়ারে ঠিক কত গোল করেছিলেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। সম্প্রতি তাঁর একটি জার্সি নিলামে উঠতে চলেছে, যা এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে।
১৯৬৯ সালের ১৪ই নভেম্বর, ব্রাজিলের একটি ম্যাচে পেলে তাঁর ৯৯৯তম গোলটি করেন। এরপর, ১৯শে নভেম্বর রিও ডি জেনিরোতে ভাস্কো দা গামার বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে তাঁর হাজারতম গোলটি করার কথা ছিল।
মারাকানা স্টেডিয়ামে প্রায় ৮০ হাজার দর্শক সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে এসেছিলেন। যদিও গোলটি পেনাল্টি থেকে আসায় অনেকের মনে কিছুটা হতাশা ছিল, তবুও পেলে’র এই মাইলফলক উদযাপন করতে কোনো ত্রুটি ছিল না।
খেলা শেষে পেলেকে কাঁধে তুলে মাঠ প্রদক্ষিণ করা হয়, যেন ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিতেছে।
কিন্তু গোলসংখ্যার হিসেবে একটা বড় সমস্যা ছিল। পেলের খেলা জীবনের পরিসংখ্যান ভালোভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি।
বিভিন্ন সময়ে হওয়া স্থানীয়, রাজ্য ও আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোতে গোলের হিসাব রাখা কঠিন ছিল। এমনকি অনেক প্রীতি ম্যাচেরও সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না। এর ফলস্বরূপ, পেলের হাজারতম গোল নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে জানা যায়, ১৯৫৯ সালে প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে এক ম্যাচে পেলে একটি গোল করেছিলেন, যা হিসাবের বাইরে ছিল। সেই হিসেবে, ভাস্কো দা গামার বিরুদ্ধে করা গোলটি তাঁর হাজারতম গোল ছিল না।
বরং, তারও আগে, ১৪ই নভেম্বর বোটাফোগো দা পারাইবার বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে করা গোলটি ছিল আসল ‘হাজারতম গোল’।
এই ঘটনার স্মৃতি হিসেবে, বোটাফোগো’র বিরুদ্ধে খেলা সেই ম্যাচের জার্সিটি নিলামে তোলা হচ্ছে। জার্সির মালিক আসলে ছিলেন স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি, যিনি ম্যাচ শেষে পেলের কাছ থেকে জার্সিটি সংগ্রহ করেছিলেন।
জানা গেছে, আসন্ন নিলামে জার্সিটির দাম প্রায় পাঁচ লক্ষ পাউন্ড পর্যন্ত উঠতে পারে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় কয়েক কোটি টাকার সমান।
ফুটবল ইতিহাসে পেলের স্থান সবার উপরে। তাঁর খেলা এবং গোল করার ক্ষমতা আজও কিংবদন্তী হয়ে আছে। বিতর্ক সত্ত্বেও, তাঁর হাজারতম গোলের স্মৃতি ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে অম্লান হয়ে থাকবে।
তাঁর জার্সি নিলামে ওঠা প্রমাণ করে, ফুটবলের ইতিহাসে তাঁর অবদান কতটা মূল্যবান। তথ্য সূত্র: The Guardian