মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর, পেন্টাগন, সম্প্রতি এক নতুন নীতি ঘোষণা করেছে, যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই নতুন নিয়মানুসারে, পেন্টাগনের কর্মপরিধির ভেতরের কোনো তথ্য প্রকাশ করার আগে সাংবাদিকদের কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে, এমনকি সেই তথ্য যদি শ্রেণীবদ্ধ নাও হয়।
এই পদক্ষেপের ফলে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। পেন্টাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নতুন নীতির মূল উদ্দেশ্য হলো নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তবে সমালোচকরা বলছেন, এর মাধ্যমে সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের একটি অঙ্গীকারনামা স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে, যেখানে তাদের অনুমোদিত নয় এমন কোনো তথ্য প্রকাশ না করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
এই নিয়ম না মানলে পেন্টাগনে প্রবেশের অনুমতি বা অ্যাক্রেডিটেশন বাতিল হওয়ারও সম্ভবনা রয়েছে। এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও সংবাদ মাধ্যম।
ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব-এর প্রেসিডেন্ট মাইক বালসামো বলেছেন, “সামরিক বাহিনীর খবর যদি সরকারের অনুমোদন নিয়ে প্রকাশ করতে হয়, তাহলে জনসাধারণ স্বাধীন সংবাদ থেকে বঞ্চিত হবে।
তিনি একে “প্রত্যেক আমেরিকানের জন্য উদ্বেগের বিষয়” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট-এর সম্পাদক ম্যাট মারে-ও এই নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, “সরকারের এমন পদক্ষেপ সংবাদ পরিবেশনের স্বাধীনতা খর্ব করে।
পেন্টাগনের এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হলো, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি, পেন্টাগন থেকে কিছু তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল, যা কর্তৃপক্ষের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে।
এর পরেই তারা এমন কঠোর নীতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, সমালোচকদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাকে খর্ব করে এবং স্বচ্ছতার অভাব সৃষ্টি করে।
তাঁদের মতে, মুক্ত গণমাধ্যম গণতন্ত্রের একটি অপরিহার্য অঙ্গ, যা সরকারের কাজকর্মের ওপর নজর রাখে এবং জনসাধারণের কাছে সত্য খবর পৌঁছে দেয়। এই নীতি সেই মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো যে, একটি গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য মুক্ত ও স্বাধীন সাংবাদিকতা অপরিহার্য।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।