মার্কিন সামরিক বাহিনীতে বড় পরিবর্তনের আভাস! খরচ কমাতে কি পদক্ষেপ?

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন তাদের সামরিক বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ে বড় ধরনের কাটছাঁটের পরিকল্পনা করছে। সম্প্রতি, মার্কিন সরকারের ব্যয় সংকোচনের নীতির অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে তারা।

একটি অভ্যন্তরীণ নথির বরাত দিয়ে সিএনএন-এর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন কম্যান্ড একত্রীকরণ করা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ইউরোপীয় কম্যান্ড (EUCOM) এবং আফ্রিকা কম্যান্ডকে (AFRICOM) একত্রিত করে জার্মানির স্টুটগার্টে একটি প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা।

এছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলীয় কম্যান্ড (NORTHCOM) এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় কম্যান্ডকে (SOUTHCOM) একীভূত করে ‘AMERICOM’ নামে একটি নতুন কম্যান্ড তৈরির প্রস্তাব রয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের তৈরি করা ওই নথিতে দেখা যায়, কর্মকর্তাদের এমন সিদ্ধান্তের মূল কারণ হলো ব্যয় কমানো। সরকারের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (DOGE) নামক একটি বিভাগের চাপে এই কাটছাঁট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেটে হেগসেথ গত মাসে এক ভিডিও বার্তায় জানান, সামরিক বিভাগের সবচেয়ে বড় বাজেট থেকে কিভাবে অপচয় কমানো যায়, সে বিষয়ে DOGE-এর সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।

বর্তমানে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর বার্ষিক বাজেট ৮০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। হেগসেথ আরও জানান, সদর দপ্তর এবং অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা খাতে ব্যয় কমানোর মাধ্যমে সেই অর্থ অন্য খাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

প্রতিরক্ষা দপ্তর মূলত অসামরিক কর্মীদের সংখ্যা কমানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিভাগের বেসামরিক কর্মচারীদের সংখ্যা ৫ থেকে ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর লক্ষ্য রয়েছে।

যদি কম্যান্ডগুলো একত্র করা হয়, তবে এর ফলে প্রায় ৩৩০ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে, এই একত্রীকরণের ফলে কম্যান্ডারের কাজের পরিধি বাড়বে এবং কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে বলে নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

খরচ কমানোর জন্য আরও একটি প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে। সেটি হলো, জাপানে মার্কিন বাহিনীর সম্প্রসারণ স্থগিত করা।

এতে প্রায় ১.১ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হতে পারে। তবে, জাপানে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কম্যান্ড ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়াও, জয়েন্ট স্টাফের (Joint Staff) বিভিন্ন খাতেও বড় ধরনের কাটছাঁটের প্রস্তাব করা হয়েছে।

  • এর মধ্যে রয়েছে জয়েন্ট স্টাফের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা বিষয়ক বিভাগ (J7) বাতিল করা, ভবিষ্যতের কার্যক্রম, সাইবার এবং প্রশিক্ষণ বিভাগে কর্মরত প্রায় ৪০০ জন বেসামরিক কর্মীকে ছাঁটাই করা এবং জয়েন্ট স্টাফের কর্মীদের ভার্জিনিয়ার সাফোক-এ সরিয়ে নেওয়া।

আরেকটি প্রস্তাব হলো, জয়েন্ট ইনফরমেশন অপারেশনস ওয়ারফেয়ার সেন্টার (JIOWC) বাতিল করা।

এই সেন্টারটি ২০০৫ সালে মার্কিন স্ট্র্যাটেজিক কম্যান্ড তৈরি করে। নথিতে এটিকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা যেতে পারে। তবে, এর ফলে দক্ষ কর্মী ও বিশেষজ্ঞ হারানোর ঝুঁকিও রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *