মার্কিন সামরিক বাহিনীর কার্যক্রমের ওপর নজরদারি করা সাংবাদিকদের সংগঠন পেন্টাগন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (PPA), মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিবের দফতর পেন্টাগনের ভেতরে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করার সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং জনগণের জানার অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত।
শুক্রবার রাতে ঘোষিত নতুন বিধিনিষেধ অনুযায়ী, পেন্টাগনের অভ্যন্তরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। সেইসঙ্গে তাদের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের একজন সহযোগী থাকতে হবে। পেন্টাগন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন একে ‘সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার সরাসরি চেষ্টা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান পেশাদার সম্পর্ক বজায় রাখতে চেয়েছিল, যা বহু বছর ধরে চলে আসছে। তবে তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। তারা আরও বলেছে, প্রতিরক্ষা দপ্তর কেন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করতে এত মনোযোগ দিচ্ছে, তা তাদের বোধগম্য নয়।
অন্যদিকে, প্রতিরক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, তারা জাতীয় নিরাপত্তা এবং সংবেদনশীল তথ্য সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের মতে, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে এমন তথ্যের প্রকাশ রোধ করা যাবে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, এই ধরনের বিধিনিষেধ স্বচ্ছতাকে খর্ব করে এবং জনসাধারণের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এর আগেও, সাবেক ফক্স নিউজ উপস্থাপক এবং বর্তমানে প্রতিরক্ষা সচিবের দায়িত্বে থাকা হেগেথ সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। এমনকি, তিনি তার সাবেক সহকর্মী ও অন্যান্য সাংবাদিকদেরও সমালোচনা করেছেন। গত জানুয়ারি মাস থেকে স্বাধীন গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে আনতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাংবাদিকদের জন্য সংরক্ষিত স্থান বাতিল এবং নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের সংখ্যা কমানোর মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মাইক বালসামো বলেছেন, সামরিক বাহিনীর কার্যক্রমের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন সবার স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে ভোটাররা তথ্য পান, গণতান্ত্রিক তদারকি শক্তিশালী হয় এবং বিশ্বকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া যায় যে, যুক্তরাষ্ট্র উন্মুক্ততা ও জবাবদিহিতার পক্ষে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন