ট্রাম্প: যিনি কখনো ভুল করেন না!

ডোনাল্ড ট্রাম্প: যিনি কখনো ভুল করেন না, এমন এক প্রেসিডেন্টের বিপদ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসন ক্ষমতা প্রায়ই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তার নীতি-নির্ধারণের ধরন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অনমনীয় মনোভাব অনেক সময় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ট্রাম্পের সময়ে নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে বাণিজ্য বিষয়ক পদক্ষেপগুলো বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করেছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পের এই ধরনের একগুঁয়েমিপূর্ণ আচরণ বাজারের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলোতেও ফাটল ধরায়।

ট্রাম্প প্রায়ই নিজের সিদ্ধান্তগুলোকে সঠিক প্রমাণ করার চেষ্টা করেন। সমালোচকদের মতে, তিনি কোনো ভুল স্বীকার করতে নারাজ। এই বিষয়টি তার নেতৃত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

অনেক সময় দেখা যায়, তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং সমালোচকদের মতামতকে গুরুত্ব দেন না। এমনকি বিভিন্ন জরিপে তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়লেও, তিনি নিজের অবস্থানে অটল থাকেন। সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি তার অর্থনৈতিক নীতির পরিবর্তনের ঘোষণা দেন।

এই ধরনের আকস্মিক পরিবর্তন অনেক সময় তার উপদেষ্টাদেরও হতবাক করে দেয়।

বিশ্লেষকরা ট্রাম্পের এই ধরনের আচরণের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের (এফডিআর) তুলনা করে থাকেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও মহামন্দার সময়ে রুজভেল্টের নীতিনির্ধারণী ক্ষমতা ছিল প্রশংসার যোগ্য।

রুজভেল্ট সংকট মোকাবিলার জন্য পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করেননি এবং প্রয়োজনে ভুল স্বীকার করে নতুন পথে হেঁটেছেন। তিনি সমালোচকদের কথা শুনেছেন এবং তাদের পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়েছেন।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের মধ্যে ভিন্নতা দেখা যায়। তিনি বিতর্কের চেয়ে নিজের একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। বিশ্লেষকদের মতে, এটি গণতন্ত্রের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়।

কারণ, কোনো বিষয়ে গভীর আলোচনা ও পর্যালোচনার পরিবর্তে তিনি প্রায়ই নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন। ট্রাম্পের এই ধরনের দৃঢ়চেতা মনোভাব অনেক সমর্থকের কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে, তবে এর ফলস্বরূপ বাজারের অস্থিরতা, জোটবদ্ধতা দুর্বল হওয়া এবং জনগণের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হতে পারে।

ট্রাম্প প্রায়ই নিজেকে এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরেন যিনি ‘আমেরিকাকে আবার মহান করেছেন’। তার সমর্থকেরা মনে করেন, তিনি কোনো ভুল করেন না।

তবে সমালোচকরা বলছেন, এই ধরনের আত্মবিশ্বাসের কারণে তিনি বাস্তবতাকে অস্বীকার করেন এবং নিজের ভুলগুলো থেকে শিখতে চান না। এই প্রবণতা একটি দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, যা ট্রাম্পের শাসনকালে বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *