পেরিমেনোপজ নাকি PMS? বিশেষজ্ঞের পরামর্শ!

পেরিমেনোপজ এবং প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিন্ড্রোম (PMS): কীভাবে বুঝবেন পার্থক্য?

মহিলাদের জীবনে মেনোপজ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে, এই পরিবর্তনের আগে শরীরে কিছু লক্ষণ দেখা যায়, যাকে বলা হয় পেরিমেনোপজ। অনেক সময় এই সময়ের উপসর্গগুলো প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিন্ড্রোম (PMS)-এর সঙ্গে গুলিয়ে যেতে পারে।

মাসিক ঋতুস্রাবের আগে PMS-এর কারণে শারীরিক ও মানসিক কিছু পরিবর্তন হয়। অন্যদিকে, পেরিমেনোপজের উপসর্গগুলো মাসিকের সময় ছাড়াও সারা বছর দেখা যেতে পারে। এই দুটো অবস্থার মধ্যে পার্থক্য বোঝা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেওয়া যায় এবং শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা যায়।

পেরিমেনোপজ সাধারণত মহিলাদের জীবনে ৩৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হতে পারে। তবে, কারো ক্ষেত্রে এটি আগে বা পরেও শুরু হতে পারে। এই সময়ে শরীরে হরমোনের তারতম্য ঘটে, বিশেষ করে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ওঠা-নামা হয়।

এর ফলে অনিয়মিত মাসিক, ঘুমের সমস্যা, হট ফ্ল্যাশ (হঠাৎ গরম লাগা) এবং মুড সুইংয়ের মতো সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।

অন্যদিকে, PMS সাধারণত মাসিক শুরুর ১-২ সপ্তাহ আগে শুরু হয় এবং মাসিক শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। PMS-এর প্রধান লক্ষণগুলো হলো—স্তনবৃন্তের স্পর্শকাতরতা, পেট ফাঁপা, মাথা ব্যথা, মন খারাপ, এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি।

অনেকের ক্ষেত্রে PMS-এর কারণে শারীরিক ও মানসিক অস্বস্তি অনেক বেড়ে যায়।

তাহলে, কিভাবে বুঝবেন আপনার সমস্যাটি PMS নাকি পেরিমেনোপজের কারণে হচ্ছে? মূল পার্থক্য হলো উপসর্গের সময়সীমা এবং প্রকৃতি।

PMS-এর উপসর্গগুলো মাসিকের আগে দেখা দেয় এবং মাসিক শেষ হওয়ার পরে সাধারণত সেরে যায়। কিন্তু পেরিমেনোপজের উপসর্গগুলো সারা মাস জুড়েই থাকতে পারে, এমনকি মাসিক নিয়মিত হলেও এর প্রভাব দেখা যায়।

এখানে একটি সংক্ষিপ্ত তুলনা দেওয়া হলো:

  • PMS: মাসিক শুরু হওয়ার ১-২ সপ্তাহ আগে উপসর্গ দেখা যায়। মাসিক শেষ হওয়ার পরে উপসর্গগুলো সাধারণত কমে যায়।
  • পেরিমেনোপজ: সারা মাস জুড়েই উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে। অনিয়মিত মাসিক, হট ফ্ল্যাশ, ঘুমের সমস্যা, এবং মুড সুইং এর মত সমস্যাগুলো এক্ষেত্রে প্রধান।

যদি আপনার মনে হয় আপনার মধ্যে পেরিমেনোপজের কোনো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তবে দ্রুত একজন গাইনিকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনেক ক্ষেত্রে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবনের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

বাংলাদেশে এখন অনেক অভিজ্ঞ গাইনোকোলজিস্ট রয়েছেন, যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপনি আপনার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। এছাড়া, প্রয়োজনে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিলে আপনি সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবেন।

তথ্য সূত্র: হেলথলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *