পেরুর আমাজন জঙ্গলে একদল পর্যটকের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। সশস্ত্র ডাকাতরা একটি নৌকায় হামলা চালিয়ে ১৪ জন পর্যটকের কাছ থেকে সবকিছু লুটে নেয় এবং তাদের মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়।
এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন এক জনপ্রিয় স্প্যানিশ টিকটক তারকা, যিনি তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে পেরুর ইকিতোস শহর থেকে একদিনের নৌ-ভ্রমণে বের হওয়া পর্যটকদের সঙ্গে। পর্যটকদের মধ্যে ছিলেন ওই টিকটক তারকা এলিসাবেত দে লা আলমুদেনা, তার বাবা-মা এবং ৬ বছর বয়সী এক শিশু।
আলমুদেনা জানান, তারা একটি পারিবারিক ভ্রমণে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাদের অপহরণ করা হয়। সশস্ত্র চারজন লোক পিস্তল ও একটি মেশিনগান নিয়ে নৌকায় ওঠে এবং সবার জিনিসপত্র কেড়ে নেয়।
এমনকি তারা নৌকার ইঞ্জিনটিও খুলে নেয়।
আলমুদেনা আরও জানান, ডাকাতরা তাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা বের করে তাদের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে বাধ্য করে।
তিনি বলেন, “আমি চাই না কারও সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটুক।” ঘটনার পর পর্যটকেরা কোনওমতে নৌকার কিছু অংশ ব্যবহার করে নদী পাড়ি দেন এবং অন্য একটি নৌকার সাহায্যে তীরে ফিরতে সক্ষম হন।
আলমুদেনার অভিযোগ, ট্যুর কোম্পানি ক্যানোপি ট্যুরস ইকিতোসের নৌকায় কোনও জিপিএস ট্র্যাকার ছিল না, ছিল না কোনও বীমা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
তিনি আরও জানান, এর আগেও নাকি ওই অঞ্চলে এমন ঘটনা ঘটেছে। ক্যানোপি ট্যুরস কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ১৪ই মে ঘটা এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।
তারা দ্রুত কর্তৃপক্ষের কাছে খবরটি জানায় এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরণের সাহায্য করেছে। একইসঙ্গে, ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।
এর মধ্যে জিপিএস মনিটরিং, পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এই ঘটনার পর, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পেরু ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পেরুতে অপরাধের ঝুঁকি রয়েছে। রাস্তায় ছিনতাই, গাড়ি ছিনতাই, হামলা এবং অন্যান্য সহিংস ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে, এমনকি দিনের আলোতেও।
অপহরণের ঘটনা বিরল হলেও একেবারে হয় না তা নয়।”
পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্রমণের আগে অবশ্যই নির্ভরযোগ্য ট্যুর অপারেটর নির্বাচন করা উচিত এবং ভ্রমণের গন্তব্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত।
তথ্যসূত্র: সিএনএন