লিমায় চরম আতঙ্ক! জরুরি অবস্থা, রাস্তায় নামছে সেনা!

পেরুর রাজধানী লিমায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হওয়ায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট দিনা বোলোয়ার্তে’র নেতৃত্বাধীন সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা শহরের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে নামবে।

সোমবার রাতে এই জরুরি অবস্থা জারির ফলে পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যরা এখন থেকে সন্দেহভাজনদের আটক করতে পারবে। এই বিধিনিষেধ আগামী ৩০ দিন পর্যন্ত বহাল থাকবে।

সম্প্রতি লিমায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় সরকার এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে। বিশেষ করে, একটি জনপ্রিয় শিল্পী’র মৃত্যু এবং একটি রেস্টুরেন্টে বোমা হামলার ঘটনার পরেই জরুরি অবস্থা ঘোষণার সিদ্ধান্ত আসে।

জানা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহে অপরাধী গোষ্ঠীগুলো ব্যবসায়ীদের, বিশেষ করে পরিবহন সংস্থাগুলোকে টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে। এর আগে, গত রবিবার জনপ্রিয় শিল্পী পল ফ্লোরেস’কে বহনকারী একটি বাসে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।

তারা সম্ভবত বাস মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করছিল। এই হামলায় শিল্পী’র মৃত্যু হয়। এছাড়া, একটি রেস্টুরেন্টে বিস্ফোরণে অন্তত ১১ জন আহত হয়েছে।

পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, চলতি বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ১৬ই মার্চের মধ্যে লিমায় প্রায় ৪5৯ জন খুন হয়েছে। শুধু জানুয়ারিতেই ১,৯0৯টি চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট বোলোয়ার্তে’র সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। এর আগে, গত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্তও লিমায় জরুরি অবস্থা জারি ছিল।

প্রেসিডেন্ট বোলোয়ার্তে’র সরকার ঘোষণা করেছে যে, অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায় কিনা, সে বিষয়ে তারা বিবেচনা করছেন। যদিও পেরুতে শুধুমাত্র রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।

এদিকে, বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুয়ান হোসে সান্টিভানেজ’র বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের আবেদন করেছেন। তাদের অভিযোগ, বর্তমান পরিস্থিতিতে সহিংসতা দমনে মন্ত্রীর কোনো পরিকল্পনা নেই।

খুব সম্ভবত চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে কংগ্রেসের অধিবেশনে এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পেরুর কর্তৃপক্ষ অতীতেও বিভিন্ন সময়ে অপরাধ ও অস্থিরতা বেড়ে গেলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।

জরুরি অবস্থার কারণে কর্তৃপক্ষের হাতে সমাবেশ ও চলাচলের স্বাধীনতা সীমিত করার ক্ষমতা আসে। পাশাপাশি, পুলিশ ও সামরিক বাহিনী বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াই সন্দেহভাজনদের আটক করতে পারে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *