মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান, দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী (Secretary of Defense) পদে আসীন আছেন যিনি, সেই পিট হেজেথের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তাঁর নেতৃত্বাধীন পেন্টাগনে (যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর) বিশৃঙ্খলা ও গোপন সামরিক তথ্য আদান-প্রদানের অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে এখন তীব্র বিতর্ক চলছে।
খবর অনুযায়ী, হেজেথ ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ‘সিগনাল’ নামক একটি মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করতেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেন, যেখানে গোপনীয়তা রক্ষার কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
জানা গেছে, হেজেথ তাঁর ব্যক্তিগত ‘সিগনাল’ চ্যাটরুমে গত মাসে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর চালানো মার্কিন বিমান হামলার বিস্তারিত তথ্য আদান-প্রদান করেছেন। এই চ্যাটরুমে হেজেথের স্ত্রী, ভাই এবং আরও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন।
শুধু তাই নয়, তিনি একই ধরনের তথ্য অন্য একটি ‘সিগনাল’ গ্রুপেও শেয়ার করেছেন, যেখানে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা ছিলেন।
এই ঘটনার জেরে পেন্টাগনের সাবেক মুখপাত্র জন উলিয়ট হেজেথের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি তাঁর নেতৃত্বকে ‘পুরোপুরি বিপর্যয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, এর ফলস্বরূপ হেজেথকে তাঁর পদ হারাতে হতে পারে।
উলিয়ট আরও জানান, হেজেথের আমলে পেন্টাগনের মনোযোগ এখন যুদ্ধক্ষেত্রের পরিবর্তে ‘অন্তহীন নাটক’-এর দিকে বেশি।
বিষয়টি নিয়ে ডেমোক্রেটিক সিনেটর ট্যামি ডাকওয়ার্থ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হেজেথের এমন কর্মকাণ্ড সৈন্যদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে।
তাঁর মতে, হেজেথের পদত্যাগ করা উচিত। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় দলের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিকদের মধ্যে এই বিষয়ে তীব্র মতভেদ দেখা যাচ্ছে।
তবে, পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল এক বিবৃতিতে এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি এটিকে ‘মিথ্যা সংবাদ’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এজেন্ডা বাস্তবায়নে দপ্তরটি আরও শক্তিশালী হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হেজেথের এই ধরনের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঘটনা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কারণ, এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।
বর্তমানে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে মনে করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান