গোপন ইন্টারনেট লাইনে সিগন্যাল! হেগসেথের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান, পিট হেজেথ, তার দপ্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে ব্যক্তিগত কম্পিউটারে সিগন্যাল মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহারের জন্য একটি অনিরাপদ ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করেছিলেন। সম্প্রতি প্রকাশিত খবরে এমনটাই জানা গেছে।

এই ঘটনায় সামরিক গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা এপির বরাত দিয়ে জানা যায়, হেজেথের অফিসে একটি ‘ডার্টি লাইন’ বা বাণিজ্যিক ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা হয়েছিল। এটি পেন্টাগনের নিরাপত্তা প্রোটোকল ভেঙে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশের সুযোগ করে দিত।

সাধারণত, সামরিক বিভাগের কম্পিউটারগুলো ‘এসআইপিআরনেট’ (SIPRNet) ও ‘এনআইপিআরনেট’ (NIPRNet) নামক দুটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এসআইপিআরনেট হলো classified বা গোপনীয় তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ব্যবহৃত একটি সুরক্ষিত ব্যবস্থা, যেখানে এনআইপিআরনেট হলো unclassified বা সাধারণ তথ্যের জন্য ব্যবহৃত একটি ব্যবস্থা।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হেজেথের এই পদক্ষেপের ফলে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য হ্যাকিং বা নজরদারির ঝুঁকিতে পড়তে পারে। সূত্র বলছে, হেজেথের ডেস্কে মাঝে মাঝে তিনটি কম্পিউটার দেখা যেত: একটি ব্যক্তিগত কম্পিউটার, একটি ক্লাসিফাইড তথ্যের জন্য এবং অন্যটি অতি-গোপনীয় সামরিক তথ্যের জন্য।

ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোতে স্পাইওয়্যার থাকার সম্ভাবনা থাকায়, সাধারণত কারো প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধানের অফিসে এগুলো ব্যবহারের অনুমতি নেই।

এর আগে, হেজেথের সিগন্যাল ব্যবহারের বিষয়ে আরও কিছু তথ্য ফাঁস হয়েছে। জানা গেছে, তিনি তার পরিবার ও বন্ধুদের একটি গ্রুপের সঙ্গে সংবেদনশীল সামরিক তথ্য আদান-প্রদান করতেন।

‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক ‘ফক্স নিউজ’-এর উপস্থাপক হেজেথ তার অফিসে একটি ডেস্কটপ কম্পিউটারে সিগন্যাল ইনস্টল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, “আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে সেক্রেটারি তার সরকারি কম্পিউটারে কখনো সিগন্যাল ব্যবহার করেননি এবং বর্তমানেও করেন না।

অন্যদিকে, ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকা ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর একটি প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। এতে বলা হয়েছে, হেজেথ তার স্ত্রী, ভাই, ব্যক্তিগত আইনজীবী এবং আরও নয়জনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একটি ব্যক্তিগত সিগন্যাল গ্রুপ তৈরি করেছিলেন, যেখানে তিনি ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলার মতো সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করতেন।

আশ্চর্যজনকভাবে, ২০১৬ সালে যখন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ব্যক্তিগত ইমেল সার্ভার ব্যবহার করে সরকারি কাজকর্ম করেছিলেন, তখন হেজেথ এই কাজের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, “সামরিক বা সরকারি যে কোনো নিরাপত্তা পেশাদার এমন কাজ করলে সঙ্গে সঙ্গে বরখাস্ত হতেন এবং তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হতো। হিলারির ক্ষেত্রে কোনো জবাবদিহিতা না হওয়ায়, যারা দেশের গোপনীয়তাকে গুরুত্ব দেন, তাদের মনে আঘাত লেগেছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *