পেন্টাগনে হেগসেথের স্ত্রীর ক্ষমতা: তীব্র সমালোচনার ঝড়!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধানের স্ত্রী জেনিফার হেগসেথের পেন্টাগনে অনানুষ্ঠানিক ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিবের (Defense Secretary) স্ত্রী জেনিফার হেগসেথের পেন্টাগনে ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিভাগের গোপনীয় তথ্য আদান-প্রদানে তার জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে, যা নিরাপত্তা এবং নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছে। যদিও তার কোনো আনুষ্ঠানিক পদ নেই, তারপরও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তার উপস্থিতি এবং সংবেদনশীল তথ্যের আদান-প্রদান নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

সংবাদ সংস্থা সিএনএন সূত্রে জানা যায়, জেনিফার হেগসেথ তার স্বামী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, এবং আরও কয়েকজনের সঙ্গে একটি ‘সিগন্যাল’ গ্রুপ চ্যাটে যুক্ত ছিলেন, যেখানে সামরিক কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবেদনশীল তথ্য বিনিময় করা হতো। এই বিষয়ে জেনিফার হেগসেথের নিরাপত্তা ছাড়পত্র আছে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। পেন্টাগন কর্তৃপক্ষ অবশ্য নিরাপত্তা ছাড়পত্র নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে, মুখপাত্র জানিয়েছেন, জেনিফার হেগসেথ এমন কোনো বৈঠকে যোগ দেননি যেখানে গোপন বা শ্রেণীবদ্ধ তথ্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের একটি ছোট দলের উপর বেশি নির্ভর করছেন, যাদের মধ্যে তার স্ত্রীও রয়েছেন। এমনকী, তিনি গণমাধ্যমে তথ্যের ফাঁস হওয়া নিয়েও উদ্বিগ্ন। সমালোচকরা বলছেন, জেনিফার হেগসেথের এই ভূমিকা নজিরবিহীন এবং এর ফলে মিত্র দেশগুলোর মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হতে পারে।

জেনিফার হেগসেথের উপস্থিতি শুধু গোপন চ্যাটেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি বিভিন্ন সরকারি বৈঠকে, এমনকি যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গে হওয়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও অংশ নিয়েছিলেন। একজন সাবেক ঊর্ধ্বতন পেন্টাগন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, কোনো মন্ত্রীর স্ত্রীর সরকারি বৈঠকে যোগ দেওয়ার ঘটনা তিনি আগে কখনো শোনেননি। তিনি একে ‘অভূতপূর্ব’ বলেও মন্তব্য করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী বা সঙ্গীর কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়াটা স্বাভাবিক। তবে, হেগসেথ দম্পতির ক্ষেত্রে বিষয়টি যেন সীমা অতিক্রম করেছে। তাদের এই অতি-সক্রিয়তা অনেককেই বিস্মিত করেছে। বিশেষ করে, যখন জানা যায়, জেনিফার হেগসেথ মিডিয়া বিষয়ক বিষয়গুলোতেও স্বামীকে পরামর্শ দেন এবং তার প্রচারণার দায়িত্বে সহায়তা করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে, এমন পরিস্থিতিতে গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায় রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। জেনিফার হেগসেথের ভূমিকা নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলো ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি এবং সামরিক ব্যবস্থাপনায় প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *