চেক প্রজাতন্ত্রে, ছয় বছর ধরে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে অবশেষে ধরা পড়লেন এক ‘ফ্যান্টম’ বা রহস্যমানব। এই ব্যক্তি, যিনি একটি ফর্মুলা ওয়ান-স্টাইলের রেসিং কার নিয়ে দেশের হাইওয়েগুলোতে বেআইনিভাবে গাড়ি চালাতেন, তাকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।
খবরটি বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, কারণ পুলিশের তৎপরতা সত্ত্বেও এতদিন তার নাগাল পাওয়া যায়নি।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০১৯ সালে, যখন প্রথমবার ডি৪ হাইওয়েতে এই গাড়ির ছবি ধরা পড়ে। এরপর ২০২২ সালে মধ্য বোহেমিয়ার একটি হাইওয়েতে আবারও গাড়িটি দেখা যায়।
ক্যামেরার ফুটেজে চালককে হেলমেট পরা অবস্থায় দেখা যাওয়ায়, তার পরিচয় শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। জনসাধারণের জন্য রাস্তায় এই ধরনের রেসিং কার চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, কারণ এতে গাড়ির নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনেক প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য থাকে না।
যেমন – লাইট, ইন্ডিকেটর এবং নম্বর প্লেট ইত্যাদি। ফলে, এই ধরনের গাড়ি চালানো শুধু চালকের জন্যেই নয়, বরং রাস্তার অন্য ব্যবহারকারীদের জন্যও অত্যন্ত বিপজ্জনক।
রবিবার সকালে, প্রাগের কাছাকাছি ডবরিজের একটি গ্যাস স্টেশনের কাছে গাড়িটি দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই, প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ডি৪ হাইওয়েতে গাড়িটিকে দ্রুত গতিতে যেতে দেখা যায়।
খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ একটি হেলিকপ্টারসহ বেশ কয়েকটি টহলদার দল পাঠায়। ঘটনার ১৫ মিনিটের মধ্যে, বক নামক একটি গ্রামে, যেখানে গাড়িটি প্রথমবার দেখা গিয়েছিল, সেখান থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে চালককে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির বয়স ৫১ বছর, তবে তার পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি। প্রাথমিক পরীক্ষায় তার শরীরে অ্যালকোহল বা মাদকদ্রব্যের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। যদিও গাড়ির মালিক এটিকে ফেরারি হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটি আসলে ডালারা জিপি রেসিং কার।
গ্রেপ্তারের সময়কার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যায়, চালক প্রথমে পুলিশের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন এবং তাদের ব্যক্তিগত property তে প্রবেশ করার অভিযোগ করেন। পরে অবশ্য পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনার জন্য অভিযুক্তকে প্রায় ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ চেক ক্রাউন (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৪,০০০ থেকে ৪৮,০০০ টাকার মতো) জরিমানা এবং ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিলের শাস্তি হতে পারে। বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তা এবং ট্রাফিক আইনগুলির দিকে তাকালে, এই ধরনের ঘটনার গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়।
কারণ, আমাদের দেশেও রাস্তায় নিরাপত্তা বিধিনিষেধ না মেনে গাড়ি চালানো একটি গুরুতর অপরাধ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন