বৃদ্ধ বয়সেও বিচারের মুখোমুখি, চাঞ্চল্যকর মামলার সাক্ষী প্রাক্তন গোয়েন্দারা!

যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া শহরে, নব্বইয়ের দশকের একটি পুরনো ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগে তিন অবসরপ্রাপ্ত গোয়েন্দাকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

অভিযুক্তদের বয়স এখন ৭৫ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে।

ঘটনার সূত্রপাত ১৯৯১ সালে, যখন এক বৃদ্ধা মহিলার ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে প্রতিবেশী ২০ বছর বয়সী অ্যান্থনি রাইটকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এই মামলায় রাইটকে প্রায় ২৫ বছর কারাবন্দী থাকতে হয়েছিল।

কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষার পর, তার নির্দোষিতার প্রমাণ পাওয়া যায় এবং ২০১৬ সালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর পুনরায় এই মামলার শুনানিতে পুরোনো গোয়েন্দাদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা হয়।

অভিযুক্ত গোয়েন্দারা হলেন মার্টিন ডেভলিন, ম্যানুয়েল সান্টিয়াগো এবং ফ্রাঙ্ক জাস্ট্রেম্বেস্কি। ফিলাডেলফিয়ার বর্তমান জেলা অ্যাটর্নি ল্যারি ক্র্যাজনার, যিনি অতীতে নাগরিক অধিকার আইনজীবী হিসেবে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রায়ই মামলা করেছেন, তিনি ২০২১ সালে এই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগ আনেন।

এই অভিযোগ দায়ের করার সময়সীমা প্রায় শেষ হয়ে আসছিল।

মামলার শুনানিতে জানা যায়, রাইটের কাছ থেকে আদায় করা স্বীকারোক্তির বিষয়ে মিথ্যা বলার অভিযোগ রয়েছে ডেভলিন ও সান্টিয়াগোর বিরুদ্ধে। এছাড়া, ডিএনএ বিষয়ক তথ্য গোপন করার এবং ভিকটিমের পোশাক রাইটের ঘরে পাওয়ার বিষয়ে মিথ্যা বলার অভিযোগ আনা হয়েছে জাস্ট্রেম্বেস্কির বিরুদ্ধে।

আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন অভিযুক্তরা। তাদের আইনজীবীরা এই মামলা বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানালেও, আদালত এখনো পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

আইনজীবীদের মতে, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিসের পক্ষ থেকে গ্র্যান্ড জুরিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, অভিযুক্ত গোয়েন্দাদের ‘মিথ্যা বলার এবং জোর করে স্বীকারোক্তি আদায়ের’ পুরোনো রেকর্ড রয়েছে।

দীর্ঘ ২৫ বছর কারাভোগের পর, অ্যান্থনি রাইট শহর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (সে সময়ের হিসেবে প্রায় ১০৫ কোটি টাকার বেশি) পেয়েছেন।

জেলা অ্যাটর্নি ক্র্যাজনার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রায় ৫০টি মিথ্যা মামলার শিকার হওয়া ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে সহায়তা করেছেন।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *