ইউটিউব: ঐতিহ্যবাহী মিডিয়ার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেললেন পিয়ার্স মরগান!

পুরোনো দিনের খবরের কাগজ আর টেলিভিশন চ্যানেলের দিন কি সত্যিই ফুরিয়ে আসছে? বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল মিডিয়ার উত্থানের মধ্যে এমনটাই মনে করছেন বিশিষ্ট ব্রিটিশ সাংবাদিক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব পিয়ার্স মরগান। তাঁর মতে, ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো খুব শীঘ্রই ঐতিহ্যবাহী মিডিয়ার ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ জানাবে, যা পুরনো মাধ্যমগুলোর জন্য একটা বড় ধাক্কা হতে পারে।

সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে মরগান জানিয়েছেন, বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে খবরের কাগজ পড়ার প্রবণতা কমছে। তাঁর মতে, ডিজিটাল দুনিয়ায় দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে এবং আগামী দশকে হয়তো অনেক সংবাদপত্রকেই তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সমস্যা হবে।

তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি যখন নিউজ ইউকে-র সঙ্গে কাজ করতাম, তখন আমার ইউটিউব চ্যানেল ছিল না। এখন আমি ইউটিউবকে একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে দেখছি।”

মরগান এখন তাঁর ইউটিউব চ্যানেল ‘পিয়ার্স মরগান আনসেন্সর্ড’-এর স্বত্বাধিকারী। এই চ্যানেল তৈরি করার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ডিজিটাল মাধ্যমে কাজ করা অনেক বেশি সুবিধাজনক।

এখানে দ্রুত এবং কম খরচে বিশ্বজুড়ে দর্শকদের কাছে পৌঁছানো যায়। তাঁর মতে, গত মার্কিন নির্বাচনে ইউটিউবে নির্বাচনী বিষয়ক কনটেন্ট দেখা দর্শকের সংখ্যা ঐতিহ্যবাহী টিভি চ্যানেলগুলোর মিলিত দর্শকসংখ্যার চেয়ে বেশি ছিল।

পিয়ার্স মরগান মনে করেন, ইউটিউবের এই উত্থান শুধু তাঁর একার নয়, বরং অনেক প্রভাবশালী মিডিয়া ব্যক্তিত্বের কাছেই একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, অনেকেই তাঁর মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিজেদের চ্যানেল তৈরি করার কথা ভাবছেন।

এই পরিবর্তনের ঢেউ যে শুধু পশ্চিমা বিশ্বেই সীমাবদ্ধ, তা নয়। বাংলাদেশেও অনলাইন মিডিয়ার জনপ্রিয়তা বাড়ছে, যেখানে ইউটিউব একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।

বর্তমানে, অনেক বাংলাদেশি কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করে জনপ্রিয়তা লাভ করছেন। খবর, বিনোদন, শিক্ষা, খেলা – প্রায় সব ধরনের কনটেন্টই এখন ইউটিউবে পাওয়া যায়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশেও ডিজিটাল মিডিয়ার প্রসার ঐতিহ্যবাহী মিডিয়ার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতিতে, সংবাদমাধ্যমগুলোকে তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে হবে এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে।

পিয়ার্স মরগান তাঁর ইউটিউব চ্যানেলকে আরও বড় করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি চান, তাঁর এই চ্যানেলটি যেন খেলা, ইতিহাস এবং অপরাধ বিষয়ক কনটেন্ট তৈরি করে বিশ্বজুড়ে দর্শকদের কাছে পৌঁছতে পারে।

তিনি মনে করেন, আমেরিকার বাজার তাঁর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

ডিজিটাল মিডিয়ার এই ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভবিষ্যতে সংবাদমাধ্যমগুলো কীভাবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *