আশ্চর্য! পাইলট হিসেবে কেন এখনো পুরুষেরাই এগিয়ে?

আকাশ পথে নারীর পথচলা: বৈষম্যের চিত্র আর উত্তরণের সম্ভাবনা

বর্তমানে আকাশপথে পুরুষ পাইলটের আধিপত্য বেশ চোখে পড়ার মতো।

যুক্তরাজ্যের হিসাব অনুযায়ী, দেশটির বিমান সংস্থাগুলোতে কর্মরত পাইলটদের মধ্যে মাত্র ৬.৫ শতাংশ নারী।

বিষয়টি শুধু একটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বিশ্বজুড়েই এই চিত্র বিদ্যমান।

নারীদের বিমান চালানোর ক্ষেত্রে এমন বৈষম্যের কারণ কী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে উঠে এসেছে নানা দিক।

ঐতিহ্যগত ধারণা এবং বেতন বৈষম্য

আকাশ পথে নারীদের পিছিয়ে থাকার পেছনে কাজ করে বহু পুরনো কিছু ধারণা।

সমাজের চোখে, পাইলট মানেই পুরুষ—এমন একটি ধারণা আজও অনেকের মনে গেঁথে রয়েছে।

এছাড়া, বিমান সংস্থাগুলোতে বিদ্যমান বেতন বৈষম্যও একটি বড় সমস্যা।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষ পাইলটদের তুলনায় নারী পাইলটরা উল্লেখযোগ্যভাবে কম বেতন পান।

উদাহরণস্বরূপ, সহজলভ্য বিমান সংস্থা ইজিজেটে একজন পুরুষ কর্মীর আয়ের বিপরীতে একজন নারী কর্মী পান মাত্র ৫৩ শতাংশ।

উত্তরণের পথে কিছু পদক্ষেপ

অবশ্য, পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য কিছু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

ইজিজেট তাদের পাইলট প্রশিক্ষণে নারীর সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

বর্তমানে তাদের প্রশিক্ষণার্থী পাইলটদের মধ্যে ১৩ শতাংশ নারী।

এছাড়াও, পাইলটদের জন্য কর্মক্ষেত্রে কিছু সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে তাঁরা পরিবার এবং কর্মজীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেন।

যেমন—সন্তানদের দেখাশোনার জন্য শিফটিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে চিত্র এবং সম্ভবনা

বাংলাদেশেও কি একই চিত্র? আমাদের দেশে নারী পাইলটের সংখ্যা কত?

যদিও বাংলাদেশে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এখনো সেভাবে পাওয়া যায় না, তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—এখানেও নারীদের জন্য আকাশ পথে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

তবে আশার কথা হলো, দেশের বিমান সংস্থাগুলো ধীরে ধীরে হলেও নারী পাইলটদের উৎসাহিত করছে এবং তাঁদের জন্য সুযোগ তৈরি করছে।

আর্থিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ

পাইলট হওয়ার প্রশিক্ষণ বেশ ব্যয়বহুল।

অনেকের পক্ষেই এই বিশাল অংকের টাকা খরচ করে প্রশিক্ষণ নেওয়া কঠিন।

এছাড়া, সমাজে এখনো এমন কিছু ধারণা প্রচলিত আছে, যা নারীদের এই পেশায় আসতে নিরুৎসাহিত করে।

পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সচেতনতা

এই পরিস্থিতি বদলাতে হলে প্রয়োজন সচেতনতা বৃদ্ধি।

নারী পাইলটদের সমাজে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা এবং তাঁদের অভিজ্ঞতাগুলো সবার সামনে আনা দরকার।

এছাড়াও, প্রশিক্ষণ এবং ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য আরও বেশি সুযোগ তৈরি করতে হবে।

আকাশ পথে নারীর পথচলা এখনো অনেক দূর।

তবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই পথ আরও মসৃণ করা সম্ভব, যেখানে নারীরাও তাঁদের যোগ্যতা প্রমাণ করে সাফল্যের শিখরে আরোহণ করতে পারবেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *