পৃথিবীর বাইরে প্রাণের ইঙ্গিত! ৯৯.৭% নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা, তোলপাড়

পৃথিবীর বাইরে, আরও একটি গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনা! সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন একটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন যেখানে জীবনের অস্তিত্ব থাকার জোরালো প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আমাদের থেকে কয়েক লক্ষ কোটি মাইল দূরে অবস্থিত K2-18b নামক একটি গ্রহে প্রাণের সম্ভবনা নিয়ে জোর চর্চা চলছে।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এই বিষয়ে গবেষণা করছেন এবং তাঁদের প্রাথমিক ফলাফল অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক।

বিজ্ঞানীদের মতে, K2-18b গ্রহের বায়ুমণ্ডলে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদানের সন্ধান পাওয়া গেছে যা পৃথিবীর জীবজগতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

বিশেষ করে, এই উপাদানগুলি সমুদ্রের ফাইটোপ্লাঙ্কটন এবং ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে থাকে।

নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (James Webb Space Telescope) থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন গবেষকরা। এই টেলিস্কোপটি মহাকাশের গভীর থেকে ছবি তোলার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে।

গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক নিক্কু মাধুসুদন জানিয়েছেন, K2-18b গ্রহে জীবনের সম্ভাবনা প্রায় ৯৯.৭%।

তিনি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে জোরালো প্রমাণ যে সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে।

হয়তো কয়েক দশক পর আমরা ফিরে তাকিয়ে দেখব, এই সময়টাতেই জীবন্ত মহাবিশ্ব আমাদের হাতের নাগালে এসে গিয়েছিল।

অধ্যাপক মাধুসুদন আরও যোগ করেন, K2-18b-এর বায়ুমণ্ডলে এই গ্যাসগুলির পরিমাণ “পৃথিবীর তুলনায় কয়েক হাজার গুণ বেশি”, যা ইঙ্গিত করে সেখানে হয়তো জীবনের প্রাচুর্য রয়েছে।

তবে, বিজ্ঞানীরা এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।

কারণ, ৯৯.৭% সম্ভাবনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এটিকে চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করতে হলে আরও সুনির্দিষ্ট গবেষণা প্রয়োজন।

বিজ্ঞানীরা এখন ৯৯.৯৯৯৯৯% নিশ্চিত হতে চাইছেন।

অধ্যাপক ক্যাথরিন হেইম্যান্স বিবিসিকে বলেছেন, “আমাদের এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে, যেমন – এই গ্যাসের উৎস কী?”

তিনি আরও যোগ করেন, “পৃথিবীতে, এই গ্যাস তৈরি হয় সমুদ্রের অণুজীব থেকে।

কিন্তু ভিনগ্রহের ক্ষেত্রে, এমনকি নিখুঁত তথ্য থাকলেও, আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারব না যে এটি জৈবিক কারণেই তৈরি হয়েছে।

কারণ মহাবিশ্বে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যা আমরা জানি না এবং এই গ্রহে অন্য কোনো ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপের কারণেও এই গ্যাস তৈরি হতে পারে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য আগের তুলনায় অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য হলেও, তা বিশ্লেষণ করা বেশ কঠিন।

অধ্যাপক অলিভার শর্টলের মতে, “অন্যান্য নক্ষত্রের চারপাশে থাকা গ্রহ সম্পর্কে আমরা যা কিছু জানি, তা তাদের বায়ুমণ্ডল থেকে প্রতিফলিত হওয়া সামান্য আলো থেকে পাওয়া যায়।

তাই জীবনের চিহ্ন খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন।

K2-18b গ্রহটি সম্ভবত জল দ্বারা গঠিত অথবা এটি গলিত শিলা দিয়ে তৈরি।

এমনকি এমনও ধারণা করা হচ্ছে যে, এটি কোনো পৃষ্ঠতলবিহীন “ছোট গ্যাসীয় দৈত্য”।

এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণা এবং ভিনগ্রহের প্রাণী নিয়ে আমাদের ধারণা আরও অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *