শিরোনাম: প্লাস্টিক দূষণ: বিশ্বজুড়ে বিপদ, আমাদের করণীয় কি?
আজকের দিনে, প্লাস্টিক দূষণ একটি মারাত্মক সমস্যা হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদী-নালা থেকে শুরু করে সমুদ্র পর্যন্ত, সর্বত্রই প্লাস্টিকের আধিক্য দেখা যাচ্ছে।
আমাদের দেশ, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এখানেও প্লাস্টিক বর্জ্য একটি বড় সমস্যা, যা পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে।
যুক্তরাষ্ট্রে, জাতীয় উদ্যানগুলোতে প্লাস্টিক দূষণ কমাতে একটি বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘৫ জাইরস ইনস্টিটিউট’ নামক একটি সংস্থা ‘প্লাস্টিক-ফ্রি পার্কস ট্র্যাশব্লিটজ’ নামে একটি প্রকল্প শুরু করেছে।
এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় উদ্যানগুলোতে এবং ফেডারেল সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকা অন্যান্য স্থানে প্লাস্টিক দূষণের চিত্র চিহ্নিত করা। স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায়, ট্র্যাশব্লিটজ অ্যাপ ব্যবহার করে বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় এবং সেগুলোর তথ্য নথিভুক্ত করা হয়।
এই তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে, কোন ধরনের প্লাস্টিক সামগ্রী বেশি পাওয়া যাচ্ছে, এবং কোন ব্র্যান্ডের প্লাস্টিক বর্জ্য বেশি, তা চিহ্নিত করা হয়। এই ডেটা ব্যবহার করে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
এই প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে সংগৃহীত বর্জ্যের প্রায় ৭৫ শতাংশই ছিল একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক। এর মধ্যে খাদ্য সামগ্রীর মোড়ক, বোতল, বোতলের ক্যাপ, সিগারেটের ফিল্টার, টিস্যু এবং প্লাস্টিকের ছোট ছোট টুকরা উল্লেখযোগ্য।
কোকা-কোলা, পেপসি, গেটোরেড, মার্লবোরো এবং ক্যামেলের মতো ব্র্যান্ডগুলি প্রায়ই এই বর্জ্যের মধ্যে পাওয়া যায়।
এই তথ্যগুলি পরিবেশবান্ধব আইন প্রণয়নে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, ‘রিডিউসিং ওয়েস্ট ইন ন্যাশনাল পার্কস অ্যাক্ট’-এর মতো আইনগুলি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের বিক্রি ও বিতরণ বন্ধ করার চেষ্টা করে।
যদিও এই প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় উদ্যানগুলোর উপর কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে, তবে এর থেকে পাওয়া শিক্ষা আমাদের দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশেও প্লাস্টিক দূষণ একটি গুরুতর সমস্যা। বিশেষ করে, শহরের আশেপাশে এবং নদীগুলোতে প্লাস্টিকের বর্জ্য মারাত্মকভাবে বাড়ছে।
এর ফলে জলজ জীবন এবং আমাদের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই, প্লাস্টিক দূষণ রোধে আমাদের সকলের সচেতন হওয়া এবং সক্রিয়ভাবে কাজ করা প্রয়োজন।
আমরা সবাই আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে প্লাস্টিক দূষণ কমাতে পারি। প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো, পুনর্ব্যবহারযোগ্য সামগ্রীর ব্যবহার বৃদ্ধি করা, এবং স্থানীয় পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেওয়া – এই ধরনের ছোট ছোট পদক্ষেপগুলোও আমাদের পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আসুন, সকলে মিলে আমাদের চারপাশকে প্লাস্টিক মুক্ত করি, একটি সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ি।
তথ্য সূত্র: ট্র্যাভেল + লেজার