একটি জনপ্রিয় বাজেট বিমান সংস্থা, প্লে এয়ারলাইন্স, আগামী অক্টোবর মাস থেকে তাদের উত্তর আমেরিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রগামী সকল ফ্লাইট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই খবরে উদ্বেগে পড়েছেন বহু যাত্রী, বিশেষ করে যারা ইউরোপ যাওয়ার জন্য এই রুটের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।
আইসল্যান্ড ভিত্তিক এই বিমান সংস্থাটি ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র রুটে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বাল্টিমোর, বোস্টন এবং নিউ ইয়র্ক থেকে তারা সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করত, যেগুলি আইসল্যান্ডের রাজধানী রিকজাভেকে যেত। এরপর যাত্রীরা বার্লিন, কোপেনহেগেন, ডাবলিন, লন্ডন এবং পোর্তোর মতো ইউরোপীয় শহরগুলোতে যাওয়ার সুযোগ পেতেন।
তবে, ২০২৩ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে প্লে এয়ারলাইন্স নিউ ইয়র্ক থেকে আইসল্যান্ডের টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে, এই রুটে সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখের ফ্লাইটের একমুখী টিকিটের দাম প্রায় ২১,০০০ টাকার কাছাকাছি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে প্লে এয়ারলাইন্স সাধারণত প্রধান বিমানবন্দরগুলি ব্যবহার করে না। তারা নিউ ইয়র্ক সিটি থেকে প্রায় ৭৭ মাইল উত্তরে অবস্থিত নিউ ইয়র্ক স্টুয়ার্ট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (SWF) ব্যবহার করে। শহর থেকে কিছুটা দূরে হলেও, এই বিমানবন্দরটি প্রায়ই টিকিটের ক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে থাকে এবং নিয়মিত শাটল বাস পরিষেবাও বিদ্যমান।
বিমান সংস্থাটি জানিয়েছে, টিকিট বাতিল হওয়া যাত্রীদের হয় তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হবে, অথবা টিকিটের পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের সঙ্গে খুব শীঘ্রই যোগাযোগ করা হবে।
শুধু তাই নয়, প্লে এয়ারলাইন্স তাদের কার্যক্রমের ধরনেও পরিবর্তন আনছে। তারা তাদের বিদ্যমান আইসল্যান্ড-ভিত্তিক এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট পরিবর্তন করে মাল্টা-ভিত্তিক সার্টিফিকেট গ্রহণ করবে। একই সঙ্গে, তারা তাদের শেয়ার বাজার তালিকা থেকেও নাম প্রত্যাহার করবে এবং কম সংখ্যক গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এছাড়াও, তারা অন্যান্য সংস্থার কাছে বিমান লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লে এয়ারলাইন্সের এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এসেছে, যখন অন্যান্য বিমান সংস্থাগুলিও হয় তাদের রুটের সংখ্যা কমিয়েছে, অথবা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। সম্প্রতি, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এবং ফ্লোরিডায় ফ্লাইট পরিচালনা করা একটি আঞ্চলিক বিমান সংস্থা, সিলভার এয়ারওয়েজও তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এর কারণ হিসেবে মূলত বিশ্বজুড়ে আকাশ পথে ভ্রমণের চাহিদা কমে যাওয়া এবং জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশি ভ্রমণকারীরা যারা ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বাজেট এয়ারলাইন্সের ওপর নির্ভরশীল, তাদের জন্য এখন বিকল্প পথ খুঁজে বের করতে হবে। বিমান সংস্থাগুলির এই ধরনের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার