নতুন নাটকের জগতে নারীদের অগ্রযাত্রা: ‘প্লেহাউস ক্রিয়েচার্স’-এর মঞ্চায়ন।
নাটকের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো নারীদের মঞ্চে প্রবেশাধিকার পাওয়া। সপ্তদশ শতকে যখন নারীদের অভিনয়ে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়, সেই সময়টাকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে এপ্রিল ডি অ্যাঞ্জেলিসের নাটক ‘প্লেহাউস ক্রিয়েচার্স’।
সম্প্রতি লন্ডনের অরেঞ্জ ট্রি থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছে নাটকটি।
নাটকটি মূলত কয়েকজন নারীর গল্প বলে, যারা সেই সময় সমাজের নানা বাধা পেরিয়ে অভিনয়ে এসেছিলেন। এই নারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বিখ্যাত অভিনেত্রী নেল গ্লেইন।
জোই ব্রফের প্রাণবন্ত অভিনয়ে নেল গ্লেইনের চরিত্রটি দর্শক হৃদয়ে দাগ কাটে। এছাড়াও মিসেস বেটারটন চরিত্রে আনা চ্যান্সেলর, মিসেস মার্শাল চরিত্রে ক্যাথরিন কিংসলে, মিসেস ফার্লি চরিত্রে নিকোল সাওয়াইয়ার এবং ডল চরিত্রে ডোনা ক্রল-এর অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করে।
নাটকে তাদের কাজ, প্রেম এবং স্বপ্নগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এমনকি কিং’স কোম্পানির হয়ে তারা যে সব নাটক মঞ্চস্থ করতেন, যেমন ‘ওথেলো’ এবং ‘হ্যামলেট’ নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে নারীদের ক্ষমতায়ন এবং সমাজের চোখে তাদের মূল্যায়নের বিষয়টি নাটকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
অন্যদিকে যেমন তারা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করেছেন, তেমনই যৌন হয়রানি এবং নৈতিক বিচারের মতো বিষয়গুলোর সঙ্গেও তাদের প্রতিনিয়ত লড়তে হয়েছে।
নাটকের চরিত্রগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক, তাদের মধ্যেকার প্রতিযোগিতা এবং নাটকের পেছনের ঘটনাগুলো দর্শকদের আকর্ষণ করে।
মাইকেল ওকলির পরিচালনায় নাটকটি দর্শকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
ফোটিনি ডিমুর মঞ্চ পরিকল্পনা, পোশাক এবং আলোর ব্যবহার নাটকের গল্পকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
বিশেষ করে, মঞ্চে যখন আলো কমে আসে বা বাড়ে, তখন নারীদের মঞ্চে উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি দর্শকদের বিশেষভাবে নাড়া দেয়।
নাটকটি শুধু নারীদের মঞ্চে আসার গল্প নয়, বরং নাটকের প্রতি ভালোবাসার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
একইসঙ্গে, এটি থিয়েটার ইতিহাসের এমন একটি মুহূর্তকে তুলে ধরে, যখন নারীরা পথপ্রদর্শক, বিদ্রোহী এবং কিছুটা কৌতূহলের বিষয় হিসেবে দর্শকদের সামনে এসেছিলেন।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম