শিরোনাম: পডকাস্টের দুনিয়ায় নতুন দিগন্ত: অডিওর সাথে ভিডিও’র মিশেল
বর্তমানে ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে পডকাস্টের জনপ্রিয়তা। অডিও নির্ভর এই মাধ্যমটি এখন নতুন রূপ নিচ্ছে, যেখানে অডিওর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ভিডিও। এই নতুন ধারাটি ‘ভিডিও পডকাস্ট’ বা ‘ভডকাস্ট’ নামে পরিচিতি লাভ করছে, যা অডিও কনটেন্ট উপভোগের ধারণাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
পডকাস্ট মূলত একটি অডিও প্রোগ্রাম, যা ইন্টারনেট এর মাধ্যমে শোনা যায়। স্মার্টফোন, কম্পিউটার বা অন্য কোনো ডিভাইসে এটি ডাউনলোড বা সরাসরি শোনার ব্যবস্থা থাকে। বর্তমানে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে এর কদর বাড়ছে। খবর, আলোচনা, সাক্ষাৎকার, গল্প— নানা ধরনের কনটেন্ট নিয়ে পডকাস্ট তৈরি হয়।
তবে, সময়ের সাথে সাথে এই পডকাস্টের ধারণায় এসেছে পরিবর্তন। ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে বাড়ছে ভিডিও পডকাস্টের সংখ্যা, যেখানে শ্রোতারা একই সাথে অডিও এবং ভিডিও উপভোগ করতে পারছেন। ভিডিও আকারে পডকাস্ট প্রকাশের ফলে নির্মাতারা তাদের কনটেন্ট আরো বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে পারছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিডিও পডকাস্টের এই উত্থান ডিজিটাল কনটেন্ট জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। ইউটিউবে বর্তমানে পডকাস্টের মাসিক শ্রোতা সংখ্যা ১ বিলিয়নেরও বেশি, যা স্পটিফাই এবং অ্যাপলের মতো প্ল্যাটফর্মকেও ছাড়িয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে, স্পটিফাই তাদের প্ল্যাটফর্মে ভিডিও পডকাস্টের সংখ্যা বাড়াতে চেষ্টা করছে।
ভিডিও পডকাস্টের সুবিধা হলো, এর মাধ্যমে শ্রোতারা তাদের পছন্দের অনুষ্ঠানগুলো দেখতেও পারেন। বিশেষ করে, যারা সাক্ষাৎকারভিত্তিক বা আলোচনাধর্মী অনুষ্ঠান তৈরি করেন, তাদের জন্য ভিডিও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কারণ, এর মাধ্যমে বক্তা এবং আলোচকদের অভিব্যক্তি দেখা যায়, যা শ্রোতাদের সাথে তাদের সংযোগ আরও দৃঢ় করে।
তবে, কেউ কেউ মনে করেন, অডিও কনটেন্টের মূল আকর্ষণ হলো এর নিজস্বতা। অনেকের মতে, ভিডিও যুক্ত হওয়ায় সেই নিজস্বতা কিছুটা হলেও কমে যায়। তাদের মতে, অডিওর মাধ্যমে শ্রোতারা তাদের কল্পনাশক্তির ব্যবহার করতে পারেন, যা ভিডিওর ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না।
ভিডিও পডকাস্ট তৈরির ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ভালো মানের ভিডিও তৈরি করতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং দক্ষতার প্রয়োজন হয়, যা অনেক নির্মাতার জন্য কঠিন হতে পারে। এছাড়াও, ভিডিওর মান উন্নত করতে না পারলে তা দর্শকদের কাছে আকর্ষণ নাও হতে পারে।
এই পরিবর্তনের ফলে, পডকাস্ট নির্মাতাদের মধ্যে একটি নতুন প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে। যারা অডিওর পাশাপাশি ভিডিও তৈরি করতে পারছেন, তারা দর্শকদের কাছে আরও বেশি পরিচিতি লাভ করছেন। ডিজিটাল কনটেন্ট মার্কেটে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে, নির্মাতাদের এখন নতুন কৌশল অবলম্বন করতে হচ্ছে।
এক্ষেত্রে, বাংলাদেশের ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের রুচি ও চাহিদার কথা মাথায় রেখে পডকাস্ট তৈরি করা যেতে পারে। বর্তমানে, বাংলাদেশে ইউটিউব, ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও কনটেন্টের চাহিদা বাড়ছে। তাই, ভিডিও পডকাস্ট তৈরি করে এখানকার দর্শকদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব।
ভবিষ্যতে, অডিও এবং ভিডিওর এই মিশ্রণ ডিজিটাল কনটেন্ট জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান