গাছের বিষ: ভয়ঙ্কর চুলকানি থেকে বাঁচবেন কীভাবে?

প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়া মানেই কিছু বিপদ সঙ্গে নেওয়া। চারপাশে সবুজ গাছপালা আর নানা ধরনের পোকামাকড়ের আনাগোনা।

এদের মধ্যে কিছু আমাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আজকের লেখায় আমরা এমনই দুটি সাধারণ স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা আলোচনা করব: ত্বকের জ্বালা সৃষ্টিকারী কিছু উদ্ভিদ এবং মৌমাছি ও ভীমরুলের কামড়।

**ত্বকের জ্বালা: পরিচিত কিছু উদ্ভিদ**

বাংলাদেশে সরাসরি ‘পয়জন আইভি’ নামক উদ্ভিদ না পাওয়া গেলেও এমন অনেক গাছ আছে যা ত্বকে অ্যালার্জির সৃষ্টি করে। এই ধরনের উদ্ভিদের সংস্পর্শে এলে চর্মরোগ হতে পারে, যেমন – চুলকানি, লাল ফুসকুড়ি, ফোস্কা ইত্যাদি।

অনেক সময় গাছের পাতা বা ফুলের পরাগ রেণু থেকেও এই সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে, যখন আর্দ্রতা বেশি থাকে, তখন এই ধরনের অ্যালার্জি বেশি দেখা যায়।

এই অ্যালার্জির মূল কারণ হল উদ্ভিদের শরীরে থাকা কিছু রাসায়নিক উপাদান। এই রাসায়নিকগুলি ত্বকের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হয়ে ওঠে, ফলে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়।

যদি কোনো উদ্ভিদের সংস্পর্শে এসে ত্বকে জ্বালা বা ফুসকুড়ি দেখা যায়, তবে দ্রুত আক্রান্ত স্থানটি সাবান ও জল দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। আক্রান্ত স্থানে অ্যান্টিহিস্টামিনযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে, যা চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।

গুরুতর অবস্থায়, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হতে পারে। মনে রাখবেন, প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও যদি সমস্যা না কমে, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

**মৌমাছি ও ভীমরুলের কামড়: সতর্কতা ও প্রতিকার**

মৌমাছি ও ভীমরুলের কামড়ও একটি পরিচিত সমস্যা। এদের কামড়ে শরীরে বিষ প্রবেশ করে, যা তাৎক্ষণিক যন্ত্রণা সৃষ্টি করে। কামড়ের স্থানে লাল হয়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া এবং ব্যথা হতে পারে।

কারো কারো ক্ষেত্রে, এই সমস্যা কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

মৌমাছি বা ভীমরুল কামড়ালে, দ্রুততম সময়ে হুলটি চামড়া থেকে বের করে ফেলতে হবে। এর জন্য ধারালো কিছু ব্যবহার না করে হাতের নখ বা অন্য কোনো উপায়ে আলতো করে তোলার চেষ্টা করুন।

এরপর আক্রান্ত স্থানটি পরিষ্কার করে বরফ দিতে পারেন, যা ফোলা কমাতে সাহায্য করবে। ব্যথানাশক ওষুধ এবং অ্যান্টিহিস্টামিন গ্রহণ করা যেতে পারে।

কিছু মানুষের ক্ষেত্রে, মৌমাছি বা ভীমরুলের কামড় মারাত্মক অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। একে অ্যানাফিল্যাক্সিস বলা হয়। এই অবস্থায় শ্বাসকষ্ট, মুখ ফুলে যাওয়া, বমি বা মাথা ঘোরার মতো লক্ষণ দেখা যেতে পারে।

এমন হলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া উচিত।

**সতর্কতা ও করণীয়**

প্রকৃতিতে হাঁটাচলার সময় কিছু বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার। লম্বা হাতা ও প্যান্ট পরিধান করা, যা ত্বককে সরাসরি উদ্ভিদের সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করবে।

পোকামাকড় থেকে বাঁচতে মশা তাড়ানোর স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। কোনো অচেনা উদ্ভিদের কাছাকাছি যাওয়া বা স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।

যদি কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন। আক্রান্ত স্থানটি পরিষ্কার করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

মনে রাখবেন, সচেতনতা এবং দ্রুত পদক্ষেপ আপনাকে অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।

এই নিবন্ধটি সাধারণ তথ্যের জন্য, কোনো চিকিৎসা পরামর্শ নয়। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যে কোনো সমস্যার জন্য, অনুগ্রহ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *